Bhawanipur Assembly

মমতার ভবানীপুরে মোদীর কাজের হিসাব তুলে ধরতে হবে, ছ’টি ভাষায় পুস্তিকা তৈরির নির্দেশ শুভেন্দুর

বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, মৈথিলি, গুরমুখি এবং গুজরাতি ভাষায় পুস্তিকা তৈরির নির্দেশ দেন শুভেন্দু। ভবানীপুর বিধানসভা এলাকায় বাঙালিদের সঙ্গেই রয়েছেন পঞ্জাবি, বিহারি, গুজরাতিরাও।

Advertisement
অমিত রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৩ ১৩:১৫
Image of Mamta Banerjee, Narendra Modi, Suvendu Adhikari.

দক্ষিণ কলকাতাতেও লোকসভা ভোটের জমি তৈরির কাজ শুরু করেছে বিজেপি। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

মমতার ভবানীপুরে মোদীর কাজের প্রচার হবে ছয়টি ভাষায়। শনিবার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বুথ স্বশক্তিকরণ অভিযানের সভায় এসে এমনটাই নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আগামী ২৬ মে ৯ বছর পূর্ণ করবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সেই উপলক্ষে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের প্রচার অভিযান শুরু করবে বিজেপি। সেই প্রচারপর্বে দক্ষিণ কলকাতাতেও লোকসভা ভোটের জমি তৈরির কাজ শুরু করেছে বিজেপি। বিজেপির তরফে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিরোধী দলনেতাকে। বৈঠকে শুভেন্দু নির্দেশ দিয়েছেন, ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে নানা ভাষাভাষী মানুষের বাস। তাই প্রধানমন্ত্রীর গত ৯ বছরের কাজের খতিয়ান তুলে ধরতে হবে ভবানীপুরের সর্বস্তরের ভোটারদের কাছে। তাই শুধু একটি ভাষাতে প্রচার-পুস্তিকা তৈরি করলে হবে না। যে সব ভাষাভাষী মানুষের বাস ভবানীপুরে, সেই সব ভাষায় প্রচার-পুস্তিকা পৌঁছে দিতে হবে তাঁদের কাছে।

যে ৬টি ভাষায় পুস্তিকা প্রকাশ করা নির্দেশ দিয়েছেন শুভেন্দু, সেগুলি হল: বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, মৈথিলি, গুরমুখি ও গুজরাতি। কলকাতা পুরসভার মোট ৮টি ওয়ার্ড নিয়ে ভবানীপুর বিধানসভা। সেখানে যেমন বাঙালিদের বাস, তেমনই রয়েছেন পঞ্জাবি, বিহারি, গুজরাতিরাও। তাই আগামী লোকসভা নির্বাচনে মমতার কেন্দ্র থেকে যাতে সর্বস্তরের মানুষের সমর্থন পাওয়া যায়, সেই কাজে এখন থেকেই নেমে পড়তে বলেছেন শুভেন্দু। উদাহরণ হিসাবে তিনি ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের কথা উল্লেখ করেছেন। সে বার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ১৭৮ ভোটে এগিয়ে গিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী তথাগত রায়। তাই ভবানীপুর মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্র বলে এখানে পদ্মফুল ফোটানো সম্ভব নয়, এমনটা মানতে চাননি শুভেন্দু। যদিও, ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে ভবানীপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে মমতা ৫৬ হাজার ভোটে জিতেছিলেন।

Advertisement

ভবানীপুর কেন্দ্রের ফলাফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রয়েছে পাঞ্জাবি ভোটারদের। শনিবার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের এক পঞ্জাবি যুবক তথা বিজেপি কর্মী পবন সিংহ বিরোধী দলনেতাকে একটি কৃপাণ উপহার দেন। ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বিজেপি কর্মীকে নিজের কাছে ডেকে তাঁর পরিচয় জানতে চান নন্দীগ্রামের বিধায়ক। ওই বিজেপি কর্মীর পরিচয় জানার পর বৈঠকে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শুভেন্দু বলেন, ‘‘শিখ সম্প্রদায়ের বড় অংশের সমর্থন ছিল বিজেপির দিকে। কিন্তু কৃষি বিল নিয়ে তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ায় সেই সমর্থন বিরূপ হয়েছিল। কৃষি বিল প্রত্যাহার হয়ে যাওয়ায় ধীরে ধীরে আবার সেই সমর্থন বিজেপির দিকে ফিরতে শুরু করেছে। যার ফলস্বরূপ অমরিন্দর সিংহের মতো নেতা বিজেপিতে যোগদান করেছেন। ভবানীপুরে প্রায় ১২-১৩ হাজার পঞ্জাবি ভোটার রয়েছেন। তাঁদের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে আমাদের।’’ এর পরেই ওই শিখ বিজেপি কর্মীকে ভবানীপুর বিধানসভায় তাঁদের সম্প্রদায়কে নিয়ে একটি রাজনৈতিক সম্মেলন করতে নির্দেশ দেন। সেই সম্মেলনে যে তিনি নিজেও উপস্থিত থাকবেন, তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু।

বিরোধী দলনেতার থেকে নির্দেশ পেয়ে নিজেরদের সম্প্রদায়ের লোকজনদের সঙ্গে কথা বলাও শুরু করে দিয়েছেন বিজেপি কর্মী পবন। মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্র ভবানীপুর বিধানসভায় যে তাঁর কাজ মোটেই সহজ নয়, তা মেনে নিচ্ছেন তিনি। কারণ, ভবানীপুরের সিংহভাগ পঞ্জাবি ভোটারের সমর্থন রয়েছে তৃণমূলের দিকে।শিখ যুবক পবন বলেন, ‘‘৩০ বছর আগে ভবানীপুরে শিখদের সমর্থন বামফ্রন্টের সঙ্গে ছিল। তার আগে সেই সমর্থন ছিল কংগ্রেসের দিকে। এখন তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছে। কিন্তু দুর্নীতি ও অপশাসন দেখে বহু মানুষ তৃণমূল থেকে বিমুখ হচ্ছেন। আর মানুষ তো পরিবর্তনশীল, তাই সেই সব মানুষের কাছে গিয়ে সরকারের দুর্নীতি এবং প্রশাসনের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে নিজেদের বিকল্প রাজনীতির কথা বললেই তাঁরা আমাদের গ্রহণ করতে পারেন। শুভেন্দুদার নির্দেশে আমরা সেই কাজই করব।’’

আরও পড়ুন
Advertisement