বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর।
বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর এখন কেন্দ্রীয় সরকারের বন্দর, জাহাজ ও জলপথ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী। সেই মন্ত্রকের অধীনে থাকা কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের গেস্ট হাউসেই দলের বিক্ষুব্ধদের নিয়ে বৈঠকে বসেছেন শান্তনু। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে হাজির রয়েছেন দলের প্রাক্তন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু থেকে সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের মতো নেতারা। এরা সকলেই বিজেপি-র সদ্য ঘোষিত রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন। এ ছাড়াও রীতেশ তিওয়ারি, তুষার মুখোপাধ্যায়, দেবাশিস মিত্র ওই বৈঠকে রয়েছেন। রাজ্যের দুই বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর এবং অশোক কীর্তনীয়াও যোগ দিয়েছেন বিক্ষুব্ধদের বৈঠকে।
রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কমিটি ঘোষণার পর থেকেই দলে কোন্দল শুরু হয়ে যায়। বিজেপি-র মতো ‘শৃঙ্খলাবদ্ধ’ দলে এটা বেনজির বলেই মনে করেন গেরুয়া শিবিরের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, দলে রদবদল অতীতেও হয়েছে। কিন্তু এই ভাবে রাজ্য স্তরের নেতারা প্রকাশ্যে ক্ষোভ দেখাননি। প্রথমেই দলের একাধিক হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যান সায়ন্তন। এর পর তা যেন সংক্রমণের চেহারা নেয়।
নতুন জেলা সভাপতিদের নামের তালিকা ঘোষণার পরে পরেই ক্ষোভে বিভিন্ন হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ ছাড়েন পাঁচ মতুয়া বিধায়ক। সেই ধাক্কার মধ্যেই বিদ্রোহে যোগ দেন বাঁকুড়ার বিধায়করা। এর পরে শান্তনু, খড়্গপুর সদরের বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়, যুব মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডারা। প্রকাশ্যে ক্ষোভের কথা বলেন প্রাক্তন সহ-সভাপতি রাজকমল পাঠক। তবে শনিবার হওয়া বিক্ষুব্ধদের বৈঠকে শঙ্কুদেব ও রাজকমল উপস্থিত নেই বলেই জানা গিয়েছে।
ভোটের আগে মতুয়াদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বিজেপি রাখছে না, এই অভিযোগে অনেক আগে থেকেই ক্ষুব্ধ শান্তনু। তিনি বিজেপি ছেড়ে দেবেন কি না তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়। দলের বিভিন্ন সাংগঠনিক গ্রুপ ছাড়ার পর শান্তনু ঠাকুর বলেন, “রাজ্য বিজেপি-র বর্তমান নেতৃত্বের শান্তনু ঠাকুর বা মতুয়া সমাজের ভোট নিষ্প্রয়োজন। তাই আমারও ওই সব গ্রুপে থাকার দরকার নেই। সময়মতো সব জবাব দেব।” এর পরে বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকও করেন শান্তনু। তাতে অস্বস্তি বাড়ে রাজ্য বিজেপি-র। সে অস্বস্তি নতুন করে বাড়ল শনিবার।