তৃণমূল-বিজেপি নতুন লড়াইয়ের কেন্দ্রে সাংসদ মহুয়া মৈত্র। — ফাইল চিত্র।
তৃণমূল বনাম বিজেপি নতুন বিতর্ক। লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র এক ব্যবসায়ীর হয়ে অর্থ ও উপহারের বিনিময়ে লোকসভায় প্রশ্ন করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে অবিলম্বে মহুয়াকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করার আর্জি জানিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। সেই চিঠিতে অবিলম্বে কৃষ্ণনগরের সাংসদের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করা হয়েছে। তাঁর সাংসদপদ কেড়ে নেওয়ার আবেদনও রয়েছে। একই সঙ্গে আইনজীবী অনন্ত দেহাদরি মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সিবিআই প্রধানকে চিঠি দিয়েছেন। তাঁর দাবি, দুবাইকেন্দ্রিক ব্যবসায়ী দর্শন হিরনানদানির থেকে অর্থ এবং উপহার নিয়ে লোকসভায় ৪৬টি প্রশ্ন করেছেন মহুয়া। যে প্রশ্নগুলি আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।
এই অভিযোগ ওঠার পরে একযোগে বিজেপি, আদানি গোষ্ঠী এবং সিবিআইকে আক্রমণ করেছেন মহুয়া। স্পিকারকে চিঠি পাঠানোর কথা প্রকাশ্যে আসতে না আসতেই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একের পর এক পোস্ট করেন তিনি। লিখেছেন, ‘‘আদানি গোষ্ঠী যদি আমাকে চুপ করানোর জন্য বা আমাকে টেনে নীচে নামানোর জন্য সঙ্ঘবাদী আর ভুয়ো ডিগ্রিওয়ালাদের মিথ্যা দলিলে বিশ্বাস করবে বলে ঠিক করে থাকে, তবে আমি বলব, আপনাদের সময় নষ্ট করবেন না বরং আইনজীবীদের ভাল কাজে ব্যবহার করুন।’’
আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে বিজেপিকেও আক্রমণ করেছেন তিনি। সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তকে স্বাগত জানিয়ে চ্যালেঞ্জের সুরে মহুয়া লিখেছেন, ‘‘এই সব ভুয়ো ডিগ্রিওয়ালা এবং বিজেপির তথাকথিত প্রাজ্ঞদের বিরুদ্ধে বহু সুবিধা লঙ্ঘনের অভিযোগের বিচার বাকি আছে। আমার বিরুদ্ধে যে কোনও প্রস্তাব আপনারা সংসদে আনতে পারেন। তবে আশা করব তার আগে মাননীয় স্পিকার এই বকেয়া বিষয়গুলি মেটাবেন।’’ রবিবার আদানিদের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিও তুলেছেন মহুয়া। লিখেছেন, ‘‘আশা করব, কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ইডি আমার চৌকাঠে পৌঁছনোর আগে আদানির কয়লা দুর্নীতি নিয়ে অন্তত একটি এফআইআর দায়ের করবে।’’
নিশিকান্তের তরফে স্পিকারকে চিঠি পাঠানোর আগেই শনিবার সিবিআইয়ের ডিরেক্টর প্রবীণ সুদকে তদন্তের আর্জি জানিয়ে চিঠি লিখেছেন আইনজীবী দেহাদরি। এর জবাবে মহুয়া এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘‘সিবিআইকেও স্বাগত জানাচ্ছি। তারা আমার বিরুদ্ধে অর্থ তছরূপের অনুসন্ধান করতে পারে। কিন্তু তার আগে আদানির সমস্ত অর্থ কোন পথে সমুদ্রের ওপারে পৌছচ্ছে, চালান আর বেনামি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে, সেটাও তাদের খুঁজে বের করতে হবে।’’ এখানেই না থেমে মহুয়া আরও লিখেছেন, ‘‘আদানি হয়তো বিজেপির সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে তার প্রতিযোগীদের দৌড় থেকে ছিটকে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। এয়ারপোর্টও কিনতে পারে। কিন্তু আমার সঙ্গে এক বার চেষ্টা করে দেখুক।’’