Calcutta High Court

নিজেরা চাকরি ছাড়ুন, নইলে কড়া ব্যবস্থা! বেআইনি ভাবে স্কুলে নিযুক্তদের হুঁশিয়ারি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

আদালতের নির্দেশ, বেআইনি ভাবে কত জন সুপারিশপত্র ও নিয়োগপত্র পেয়েছেন, তা সিবিআইয়ের থেকে তথ্য নিয়ে নিশ্চিত করবে এসএসসি। মামলাকারীর আইনজীবীরাও অবৈধ নিযুক্তদের সংখ্যা বার করবে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:১৪
কত জনকে বেআইনি ভাবে চাকরির সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

কত জনকে বেআইনি ভাবে চাকরির সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

অর্থের বিনিময়ে বেআইনি ভাবে যাঁরা স্কুলের চাকরি পেয়েছেন, তাঁরা নিজে থেকেই ইস্তফা দিন। তা না হলে তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। এমনকি, ভবিষ্যতে তাঁরা যাতে কোনও সরকারি চাকরি করতে না পারেন, সে ব্যবস্থাও করবে আদালত। বেআইনি ভাবে স্কুলশিক্ষক এবং অ-শিক্ষক পদে কর্মরতদের উদ্দেশে বুধবার এই হুঁশিয়ারি দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

রাজ্যে স্কুলশিক্ষক এবং অ-শিক্ষকদের নিয়োগে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, নবম থেকে দ্বাদশ— স্কুলের নিয়োগে উত্তরপত্রে প্রায় কিছু না লিখেও নম্বর পেয়ে গিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এমনকি, তাঁদের স্কুলের চাকরিতে নিয়োগপত্রও দেওয়া হয়েছে। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষায় প্রচুর সংখ্যক সাদা খাতা জমা দেওয়া হয়েছে। কিছু খাতায় শুধুমাত্র পাঁচ-ছ’টি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। তার পরও (ওই চাকরিপ্রার্থীরা) ৫৩ নম্বর পেয়েছেন। এ ছাড়া গ্রুপ ‘সি’ এবং গ্রুপ ‘ডি’-র পরীক্ষায়ও একই জিনিস হয়েছে।’’

Advertisement

কত জনকে বেআইনি ভাবে চাকরির সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশ, ‘‘৩ অক্টোবর স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে বৈঠক করতে হবে। সাদা খাতা জমা দেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে কাদের সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে, তা-ও নিশ্চিত করবে তারা।’’ বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘বেআইনি ভাবে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের ইস্তফা দেওয়ার জন্য সুযোগ দিচ্ছে এই আদালত। ৭ নভেম্বরের মধ্যে ইস্তফা দিতে হবে তাঁদের। তা না হলে আগামী দিনে কঠোর ব্যবস্থা নেবে আদালত।’’ বিচারপতির হুঁশিয়ারি, ‘‘নিজে থেকে ইস্তফা না দিলে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। পাশাপাশি, আদালত নির্দেশ দেবে যাতে ভবিষ্যতে কোনও সরকারি চাকরিতে তাঁরা অংশ নিতে না পারেন।’’

বুধবার আদালতের নির্দেশ, বেআইনি উপায়ে কত জন সুপারিশপত্র এবং নিয়োগপত্র পেয়েছেন, তা সিবিআইয়ের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে নিশ্চিত করবে এসএসসি। এ ছাড়া মামলাকারীর আইনজীবীরাও কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে অবৈধ ভাবে নিযুক্তদের সংখ্যা খুঁজে বার করবে।

শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআইয়ের তদন্তে সন্তোষপ্রকাশ করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্য, ‘‘সিবিআই নিঃশব্দে দিল্লি এবং গাজিয়াবাদে হানা দিয়ে যে ভাবে মূল নথি উদ্ধার করেছে, সেই তদন্তের প্রশংসা করছি। এমনকি, তারা স্কুল সার্ভিস কমিশনের তথ্যের সঙ্গেও তা যাচাই করছে।’’ একই সঙ্গে বিচারপতি আশা, তদন্তের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এ বার মূলচক্রীকে সিবিআই খুঁজে বার করতে পারবে বলে আদালত আশাবাদী। দেশকে বাঁচাতে সিবিআই আধিকারিকদের নিজেদের দ্বায়িত্ব পালন করতে হবে। যে কোনও ভাবেই দেশকে বাঁচাতে হবে, সে জন্যই সিবিআই, ইডি এবং অন্যান্য তদন্তকারী সংস্থাগুলি রয়েছে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement