trolley Case

ব্যবসায়ী খুনের পিছনে কি পাচারের টাকা, রহস্য

পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তে ইঙ্গিত মিলেছে, খুন হওয়া ভাগারাম দিওয়াসি এবং অভিযুক্ত কৃশপাল সিংহ ও করণপাল সিংহ আদতে টাকা লেনদেনের কারবারের সঙ্গে যুক্ত।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫ ০৮:৫২
নীল রঙের ট্রলি ব্যাগে ব্যবসায়ীর দেহ ভরে গাড়িতে উঠেছিলেন খুনিরা।

নীল রঙের ট্রলি ব্যাগে ব্যবসায়ীর দেহ ভরে গাড়িতে উঠেছিলেন খুনিরা। —ফাইল চিত্র।

ব্যবসা, নাকি পাচার চক্রের টাকার কারণে খুন করা হয়েছে গিরিশ পার্ক থানা এলাকার মুক্তারামবাবু স্ট্রিটে? ট্রলি ব্যাগে দেহ ভরে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে ফেলতে গিয়ে ধরা পড়ার ঘটনায় তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই রহস্য বাড়ছে। পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তে ইঙ্গিত মিলেছে, খুন হওয়া ভাগারাম দিওয়াসি এবং অভিযুক্ত কৃশপাল সিংহ ও করণপাল সিংহ আদতে টাকা লেনদেনের কারবারের সঙ্গে যুক্ত। সেই সূত্রেই দু’জনে মিলে খুন করে ভাগারামকে। পরে ট্রলি ব্যাগ কিনে তাতে দেহ ভরে মহেশতলা, খিদিরপুর থেকে শুরু করে ফেয়ারলি প্লেসে দিনভর ঘোরে তারা। কোথাও দেহ ফেলার সুযোগ না পেয়ে গুগলে ‘নির্জন জায়গা’র খোঁজ করে। সেই সূত্রেই যায় কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে খেপলির বিলের কাছে।

Advertisement

কিন্তু অ্যাপ-ক্যাব নিতে হল কেন? জেরার পরে পুলিশের অনুমান, হলুদ ট্যাক্সিটির চালক দিনভর ঘোরাঘুরির পরে আর যেতে চাননি। ফলে নাগেরবাজারের কাছে তিনি ওই দু’জনকে নামিয়ে দেন। তাই বাধ্য হয়ে দুই অভিযুক্ত অ্যাপ-ক্যাবে ওঠে। কিন্তু ভারী ব্যাগ বা অন্য কিছু দেখে ওই ট্যাক্সিচালকের কোনও সন্দেহ হয়েছিল কিনা, তা এখনও জানা যায়নি।

মঙ্গলবার রাতে মুক্তারামবাবু স্ট্রিটের একটি বাড়িতে খুন হন ভাগারাম। জানা যায়, আদতে রাজস্থানের বাসিন্দা ভাগারাম শহরে কাপড় বিক্রির ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন। তদন্তে উঠে আসে, বিক্রির জন্য প্রায় আট লক্ষ টাকার কাপড় ভাগারামকে দিয়েছিল দুই অভিযুক্ত। সেই টাকা ফেরত দিতে না পারায় তাঁকে খুনের পরিকল্পনা করে কৃশপাল। এর পরে দেহ খেপলির বিলের কাছে ফেলতে গেলে অ্যাপ-ক্যাব চালকের তৎপরতায় ধরা পড়ে দুই অভিযুক্ত।

কিন্তু তদন্তে খুনের কারণ নিয়ে সন্দেহ বাড়ে পুলিশের। কারণ, খুনের পরে বকেয়া টাকা না পাওয়ার আশঙ্কাই বেশি। তবে কি উত্তেজনার বশে খুন? কিন্তু জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, কিছু দিন ধরেই খুনের পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। পুলিশের সন্দেহ হয়, আট লক্ষ টাকার পোশাক দিতে পারে যারা, তাদের সঙ্গে অত পরিমাণ পোশাক রাখার মতো গুদাম বা ব্যবসার সঙ্গে কোনও যোগ নেই। এর পরেই পুলিশ চাঞ্চল্যকর কিছু সূত্র পায়, যার জেরে রহস্য বেড়েছে। ব্যবসার কারণে ধৃতদের মুম্বই ও গুজরাতে যাতায়াতের তথ্য সেই রহস্যকে আরও বাড়িয়েছে।

জেরায় পাওয়া সূত্রের ভিত্তিতে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ নিশ্চিত যে, পোশাক বিক্রির ব্যবসার আড়ালে ধৃতেরা টাকা লেনদেনের কাজে করত। করণপাল মূলত ‘কালেকশন এজেন্ট’ অর্থাৎ বাজার থেকে টাকা তুলত। ভাগারাম সেই টাকা নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিত। সেই সূত্রে ওই আট লক্ষ টাকা নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছনোর কথা ছিল ভাগারামের। সেই কাজ না করা নিয়ে গোলমাল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। সেই সূত্রে এই ঘটনায় তৃতীয় ব্যক্তির যোগ থাকতে পারে বলেও মনে করছেন তদন্তকারীরা। সে সব বিষয় খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement
আরও পড়ুন