শীতের দুপুরে পিঠে শীতের রোদ লাগিয়ে ঠাকুমা নাতনির লুডো খেলা।বোলপুরের বাহিরিতে বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।
মেঘ কুয়াশা কাটিয়ে আকাশ পরিষ্কার হতেই জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়তে শুরু করেছে জেলায়। বুধবার থেকেই তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নীচে নামতে শুরু করেছিল। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা নামল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে।
শ্রীনিকেতন আবহাওয়া দফতরের তথ্য বলছে, এ দিন জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে শুধু ৪.২ ডিগ্রি কম যেমন, তেমনই চলতি মরসুমে শীতলতম। বৃহস্পতিবার দিনই আলিপুর আবহাওয়া দফতর দক্ষিণবঙ্গের পাঁচ জেলায় শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাসও দিয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে বীরভূম ।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে শুকনো-ঠান্ডা বাতাস ঢুকছে। এর প্রভাব দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে পড়ছে। সেটা যে শুধু কথার কথা নয়, এ দিন ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে দিব্যি টের পেয়েছেন দুবরাজপুরের চিন্ময় দত্ত। তাঁর কথায়, ‘‘ভাল রকম শীতপোশাক পরেও কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছিল। মোবাইলের আবাহাওয়া সংক্রান্ত অ্যাপ খুলে দেখলাম ১০ ডিগ্রি দেখাচ্ছে।’’ তবে এই শীত উপভোগ্যই, মত চিন্ময়ের মতো আরও অনেকের।
তবে দিন দুই পারদ নামতে থাকায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রাতর্ভ্রমণকারীদের একাংশ হাঁটার সময় একটু বদলে নিয়েছেন। কেউ দেরিতে বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন। কেউ আবার সকালের বদলে বিকেলে হাঁটছেন। তাঁদেরই এক জন, রামপুরহাট শহরের বাসিন্দা, পেশায় হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসক কিশোর মণ্ডল। তিনি জানালেন, ঠান্ডা বাড়তেই একটু দেরি করে বের হচ্ছেন। রামপুরহাট শহরেরই শাহজ়াদ আলম আবার সকালের পরিবর্তে বিকেলে হাঁটছেন। তবে, রুজির টানে যাঁদের ভোর ভোর বের হতে হয়, ঠান্ডা বাড়লে কষ্ট তাঁদের। চিকিৎসকেরা এই সময়টায় বয়স্ক এবং শিশুদের সাবধানে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশেষ করে ছোটদের সকাল সকাল স্কুল থাকায় ঠান্ডা লেগে যাওয়ার ভয় থাকেই।
তবে, মেঘমুক্ত আকাশের সঙ্গে জাঁকিয়ে ঠান্ডা শীতকালীন যে কোনও ফসলের জন্য উপযোগী বলে জানাচ্ছেন কৃষি আধিকারিকেরা। জেলার অন্যতম যুগ্ম কৃষি অধিকর্তা জয়ন্ত চন্দ বলেন, ‘‘এই সময়টায় আলু লাগাচ্ছেন চাষিরা। গম ও সর্ষে লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। সব ফসলের জন্যই উপযোগী এমন আবহাওয়া। রোদের সঙ্গে ঠান্ডা থাকলে পোকার আক্রমণও কম হবে।’’ হাওয়া অফিস জানিয়েছে, এই মুহূর্তে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। উত্তুরে হাওয়ার দাপটে সর্বত্র থাকবে শুকনো আবহাওয়া।