এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
নিখোঁজ হওয়ার দু’দিন পরে রেললাইন লাগোয়া নিকাশি নালার মধ্যে থেকে এক যুবকের দেহ উদ্ধারকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল কাঁকরতলা থানা এলাকায়। বুধবার সকালের ঘটনা। বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় পৌঁছে পরিস্থিতি সামলায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম শেখ ইনসান (৩৬)। তাঁর বাড়ি কাঁকরতলা থানার সাহাপুর গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবক সোমবার দুপুরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। পরিবারের তরফে নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল থানায়। এ দিন সকাল দশটা নাগাদ রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম বা পিডিসিএলের হজরতপুর সাইডিং লাগোয়া একটি নিকাশি নালার মধ্যে থেকে ইনসানের বস্তাবন্দি দেহ মেলে। কী ভাবে মৃত্যু, স্পষ্ট নয়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, এটি খুনের ঘটনা। আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হয়েছে।
পরিবার ও এলাকাবাসীরও দাবি, ওই যুবককে খুন করে দেহ লোপাটের চেষ্টা হয়েছে। তাঁদের আরও দাবি, মৃত যুবকের সঙ্গে স্থানীয় একটি গ্রামের এক স্বামীহারা মহিলার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সে কারণেই খুন। প্রাথমিক ভাবে দেহ উদ্ধারে গিয়ে গ্রামবাসীদের বাধার মুখে পড়ে পুলিশ। উত্তেজনার খবর পেয়ে একাধিক ডেপুটি পুলিশ সুপার এবং চারটি থানার ওসি ও আইসি বড় বাহিনী নিয়ে সেখানে পৌঁছন। গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। ওই স্বামীহারা মহিলা এবং এবং সন্দেহভাজন দু’জন ব্যক্তিকে আটকও করেছে পুলিশ। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে যুবকের মৃত্যুর সূত্র খোঁজার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এক কর্তা।
পেশায় দিনমজুর ছিলেন শেখ ইনসান। বিবাহিত ওই যুবকের চার সন্তান রয়েছে। ইনসানের স্ত্রী ছবিলা বিবিও জানান, আর এক মহিলার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন তাঁর স্বামী। এ দিন গ্রামের বাড়িতে বসে ছবিলা দাবি করেন, ‘‘প্রায় ১০ বছর ধরে ওই মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে ছিল স্বামীর। ওর ডাকেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন।’’ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করার সময়ও পুলিশের কাছে তাঁর স্বামী খুন হয়ে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন—এমনই দাবি ছবিলার। ইনসানের পরিবারের লোকজন মনে করছেন, এই খুনে একাধিক লোক জড়িত থাকতে পারেন। তাঁদের দাবি, এক জন যুবককে খুন করে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ফেলে আসা কারও একার পক্ষে পক্ষে সম্ভব নয়। দোষীদের কঠোর শাস্তি চান তাঁরা।
পুলিশের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘কী ভাবে যুবকের মৃত্যু হয়েছে, তা ময়না-তদন্তের রিপোর্ট না-পাওয়া পর্যন্ত বোঝা সম্ভব নয়। তবে, যে মহিলার দিকে অভিযোগের আঙুল, তিনি সব সত্যি বলছেন না, এটা প্রাথমিক জেরায় উঠে এসেছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁকরতলা থানা এলাকার ওই দু’টি (ইনসান এবং স্বামীহারা মহিলা যে গ্রামের বাসিন্দা) গ্রামে এর আগেও সংঘাত হয়েছে। এই ঘটনাকে ঘিরে যাতে কোনও সমস্যা না-হয়, তার জন্য আগের থেকেই সতর্ক ছিল পুলিশ। দেহ উদ্ধারের পরে অশান্তি এড়াতে এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন আছে।