Bakreshwar Thermal Power Plant

ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভাবনা বক্রেশ্বরে

প্রকল্পটি রূপায়নের জন্য পূর্ণাঙ্গ ডিপিআর তৈরি, জলাশয় ও আশেপাশের এলাকায় সমীক্ষার কাজ হচ্ছে। তারই অন্যতম জলাশয়ের থার্মো ডায়নামিক সার্ভে।

Advertisement
দয়াল সেনগুপ্ত 
সদাইপুর শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:০০
বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রর নীলনির্জন জলাধারে চলছে থার্মো ডায়নামিক সমীক্ষা। নিজস্ব চিত্র

বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রর নীলনির্জন জলাধারে চলছে থার্মো ডায়নামিক সমীক্ষা। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP

জলাশয়ের উপর ভাসমান সৌর প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে দু’টি অশোধিত ১ ও ২ পুকুরে ওই প্রকল্প ইতিমধ্যেই গড়ে উঠেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা হবে ১০ মেগাওয়াট। এ বার বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নীলনির্জন জলাধারের একাংশে আরও বড় আকারে ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার ভাবনা শুরু হয়েছে।

Advertisement

প্রকল্পটি রূপায়নের জন্য পূর্ণাঙ্গ ডিপিআর তৈরি, জলাশয় ও আশেপাশের এলাকায় সমীক্ষার কাজ হচ্ছে। তারই অন্যতম জলাশয়ের থার্মো ডায়নামিক সার্ভে। রবিবার ওই সমীক্ষার কাজ করতে দেখা গেল মহারাষ্ট্রের একটি সংস্থার হাইড্রো-ইঞ্জিনিয়ারদের।

বক্রেশ্বের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার প্রদীপ্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, “২০০ মেগাওয়াটের বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। গ্রিন এনার্জি স্টোর করার জন্য একটি সাবস্টেশন গড়ে উঠবে। তারপর গ্রিডে আসবে। তার আগে ডিটেল প্রোজেক্ট রিপোর্ট বানাতে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের হয়ে সমীক্ষার কাজ চলছে।”

মহারাষ্ট্রের যে সংস্থার তরফে সার্ভে হচ্ছে, তিন সদস্যের সেই দলের এক হাইড্রো ইঞ্জিনিয়ার মনোজ মালেকার জানান, নীলনির্জন জলাধারের ২৫ মিটার গভীরতায় একটি ডিভাইস বা যন্ত্র বসানো হচ্ছে ২৪ ঘণ্টার জন্য। সেই যন্ত্রের মাধ্যমে জলাশয় সংক্রান্ত আট রকম তথ্য পাওয়া যাবে। তালিকায় রয়েছে জলের স্রোত, ঢেউয়ের মাপ, জলের তাপমাত্রা, ঘনত্ব লবণাক্ততা ইত্যাদি। ২৪ ঘণ্টায় প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে রিপোর্ট তৈরি করবেন একজন জিওলজিস্ট। তারপরেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

কেন এই সমীক্ষা?

জানা গিয়েছে, দূষণ কমাতে বিকল্প পথে অপ্রচলিত সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দিয়েছে সরকার। সেই তালিকায় রয়েছে ভবিষ্যতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র না গড়ে চিরাচরিত শক্তির উপরে নির্ভর করেই বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। তার মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় সৌরবিদ্যুৎ। কিন্তু জমির উপর সোলার প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে অন্য রাজ্যে
তেমন সমস্যা না হলেও এ রাজ্যে প্রধান সমস্যা জমি অধিগ্রহণ। সেই জন্যই জলশয়ে ভাসমান সোলার প্যানেল বসিয়ে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের ভাবনা রয়েছে। এর
জন্য রাজ্য সরকারকে ঋণ দেয় এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট। কিন্তু যে জলাশয়ে এই প্রকল্প গড়ে উঠছে সেটি চালানো আদৌ লাভদায়ক হবে কিনা, সরকার সময়ে ঋণ পরিশোধ করতে পারবে কিনা সে সব দেখতেই এই সমীক্ষা।

থার্মো ডায়নামিক সার্ভে বা সমীক্ষার গুরুত্ব কী?

সমীক্ষক দলের সদস্য ও দলের সঙ্গে উপস্থিত এক আধিকারিকের থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই জলাশয় তৈরি হয়েছে আড়াই দশক আগে। আগে জলাশয়ের যে নাব্যতা ছিল চারদিকে কৃষিজমি ও ক্যাচমেন্ট এলাকা থেকে বালি পলি ইত্যাদি জমে সেই নাব্যতা অনেক কমে গিয়েছে। উষ্ণায়নের ফলে জলের তাপমাত্র বৃদ্ধি হয়েছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এলাকাটি খুব বেশি দূরে নয়। প্রতি বছর সাইক্লোন আসে, প্রবল বেগে হাওয়া দিতে থাকে। তাতে কোনও সমস্যা হবে কিনা, পরিবেশ, জলাশয়ে কোনও সমস্যা হবে কিনা সবই জানা যাবে সমীক্ষা থেকে।

আরও পড়ুন
Advertisement