ডেউচা-পাঁচামির জমিদাতারা বোলপুর তৃণমূল কার্যালয়ে। —নিজস্ব চিত্র।
ডেউচা-পাঁচামি কয়লা খনির জন্য জমি দিয়েও চাকরি মিলছে না অভিযোগ তুলে জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করলেন প্রস্তাবিক খনি এলাকার তৃণমূল নেতা, জমিদাতাদের একাংশ।
সোমবার রাতে বোলপুরে তৃণমূল কার্যালয়ে অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করে জমিদাতারা অভিযোগ করেন, জেলা প্রশাসন জমি নিয়ে চাকরি দিচ্ছে না অনেককে। জমি এক জনের নামে, অথচ চাকরি পাচ্ছেন অন্য জন। বিষয়টি শুনে ১০ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। জেলাশাসক বিধান রায় জানিয়েছেন, আগামী দিনে আরও নিয়োগ হতে চলেছে।
ডেউচা-পাঁচামিতে এশিয়ার বৃহত্তম খোলামুখ কয়লা খনি হওয়ার কথা। জমি অধিগ্রহণের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। জমিদাতাদের জন্য আর্থিক প্যাকেজের পাশাপাশি সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছুদিন আগে জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী কয়লা খনির জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশও দিয়ে যান।
অনুব্রতের কাছে আসা জমিদাতাদের দাবি, প্রায় সাড়ে চার হাজার জমিদাতার চাকরি পাওয়ার কথা। কিন্তু, এখনও ১৪০০ জন চাকরির নিয়োগপত্র পেয়েছেন। বাকিরা এখনও নিয়োগপত্র পাননি। তাঁদের আরও অভিযোগ, জমিদাতা নন, এমন কয়েক জনকেও চাকরি দেওয়া হয়েছে। মহম্মদবাজার ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ অনুব্রতকে জানিয়েছেন ওই জমিদাতারা।
আদিবাসী নেতা রবীন সোরেন, ভাঁরকাটা পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মোসারবারি মোল্লা, স্থানীয় তৃণমূল নেতা মুহাজুদ্দিন বিমানেরা বলেন, “সরকারি আধিকারিকেরা জমি নিয়েও চাকরি দিচ্ছেন না৷ চাকরি নিয়ে জালিয়াতি চলছে ডেউচা-পাঁচামিতে। অল্প জমি থাকলে লিখিয়ে নেওয়ার পরে অন্য জনকে চাকরি দেওয়া হচ্ছে। তাই আমরা অনুব্রত মণ্ডলের কাছে এসেছিলাম ৷ দাদা বিষয়টি দেখছেন বলে জানিয়েছেন।”
অনুব্রত বলেন, “আমি দু'বছর জেলায় ছিলাম না। তাই এই বিষয়ে কিছুই জানি না ৷ ওঁদের অভিযোগ শুনলাম৷ ওঁরা জমির পাট্টার কাগজপত্র নিয়ে এসেছিলেন। অঞ্চল, ব্লক সভাপতি, আদিবাসী নেতা, পঞ্চায়েত প্রধান— সবাই এসেছিলে৷ আমি জেলাশাসকের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা আলোচনা করব৷ যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করার চেষ্টা করব।’’ জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, “ডেউচা-পাঁচামির কাজ সঠিক পথেই এগোচ্ছে। রাজ্য সরকারের নিয়ম মেনে নিয়োগপত্র দেওয়া হচ্ছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে আরও কিছু নিয়োগ হতে চলেছে। তাই সকলকে প্রশাসনের প্রতি আস্থা রাখতে বলব।”