(বাঁ দিকে) নবদম্পতি অয়ন মিদ্যা এবং ঊষসী কর। ভোজসভায় ঢোকার মুখে আরজি কর-কাণ্ডে নির্যাতিতার প্রতীকী ছবি (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি করের নির্যাতিতাকে স্মরণ করে তাঁর প্রতীকী ছবি বসানো হল বৌভাতের অনুষ্ঠানে। বিচারের দাবি থেকে যে তাঁরা সরে আসেননি, সেটাই বোঝাতে চাইলেন বাঁকুড়ার এক নবদম্পতি। প্রীতিভোজে নিমন্ত্রিতদের আরজি করের ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিতে ওই উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানালেন চিকিৎসক অয়ন মিদ্যা এবং শিক্ষিকা ঊষসী কর।
কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর গড়িয়েছে প্রায় তিন মাস। এখন শিয়ালদহ আদালতে চলছে বিচার প্রক্রিয়া। বাঁকুড়ার নবদম্পতি অয়ন এবং ঊষসী জানালেন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তেও বিচারের দাবি থেকে তাঁরা সরছেন না। নির্যাতিতাকে ভোলার কোনও প্রশ্নই নেই বলে জানালেন ওই দম্পতি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফুল এবং আলোয় সাজানো ভোজসভার একেবারে সামনের দিকে ছিল একটি আঁকা ছবি। তার তলায় লেখা, ‘তিলোত্তমা, ভয় নাই।’ চিকিৎসক অয়নের কথায়, ‘‘আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের নির্যাতিতা আমার বোনের মতো এবং সহকর্মী। তিনি বেঁচে থাকলে হয়তো তাঁরও বিয়ের আয়োজন হত। আমরা আমাদের সুখের দিন হোক কিংবা দুঃখের দিন, তাঁকে কখনও ভুলব না। তাঁর উপর অত্যাচারের বিচার এখনও হয়নি। সে কথা স্মরণ করিয়ে দিতে এই উদ্যোগ।’’ একই কথা বললেন নববধূ ঊষসীও। তিনি বলেন, ‘‘আরজি করের নির্যাতিতার জন্য বিচারের দাবিতে যেখানেই আন্দোলন হয়েছে, সেখানেই আমরা দু’জনে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আজ যখন আমাদের একসঙ্গে পথ চলার দিন এল, সেই শুভক্ষণেও আমরা এই শপথ নিয়েছি, নির্যাতিতার জন্য আমরা বিচার আদায় করেই ছাড়ব।’’
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ কলকাতা ছাড়িয়ে আছড়ে পড়ে বাংলার জেলায় জেলায়। বাঁকুড়াও ছিল সেই তালিকায়। বিভিন্ন কর্মসূচি থেকে উঠেছে ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’ স্লোগান। দল, ধর্ম এবং বর্ণ নির্বিশেষে রাতের পর রাত দখলে শামিল হয়েছেন মহিলা এবং পুরুষেরা। উৎসবের মরসুমেও আন্দোলনের ঝাঁজ অটুট ছিল। মঙ্গলবার বাঁকুড়া শহরের বাইপাসের ধারে আয়োজিত বিয়ের প্রীতিভোজের আসরে এসে প্রথমেই ‘তিলোত্তমা’র ছবির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন অতিথিরা। ভোজ শেষে নিমন্ত্রিতদের হাতে উপহার হিসাবে একটি করে চারাগাছ তুলে দেন নবদম্পতি।