Rampurhat Medical College

 কর্মবিরতি জুনিয়র ডাক্তারদের, সমস্যা পরিষেবায়

জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, ১১ জুন রাতে যে রোগী মারা গিয়েছেন সিনিয়র চিকিৎসকদের নির্দেশ মতো তাঁর ঠিকমতো চিকিৎসা করা হয়েছে। সন্ধ্যার পরে রোগীর অবস্থার আরও অবনতি ঘটে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৪ ০৯:০৬
 জুনিয়র চিকিৎসকদের বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার রামপুরহাট মেডিক্যালের এমএসভিপি-র ঘরে।

 জুনিয়র চিকিৎসকদের বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার রামপুরহাট মেডিক্যালের এমএসভিপি-র ঘরে। নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতালে তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই অভিযোগ তুলে নিরাপত্তার দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে জরুরি বিভাগ ছাড়া অন্য বিভাগে কর্মবিরতি শুরু করেন রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিলে বিকেল চারটে নাগাদ কর্মবিরতি উঠে যায়। অভিযোগ, এই কর্মবিরতির ফলে পরিষেবায় সমস্যা তৈরি হয়। বিশেষ করে বহির্বিভাগের চিকিৎসা পেতে অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে খবর, ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার রাতে। সে দিন রাত ৮টা নাগাদ রামপুরহাট থানার সৈপুর গ্রামের ২৭ বছরের সামিনা বিবি মারা যান। সোমবার রাত তিনটে নাগাদ বুকে ব্যথা নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, কার্যত বিনা চিকিৎসায় সামিনার মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। জুনিয়র চিকিৎসকদের অভিযোগ, বিক্ষোভের সময়ে হাসপাতাল চত্বরে ঢুকে দু’-তিন জন জুনিয়র চিকিৎসককে মারধর করা হয়। এমনকি, প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, বুধবার সকালেও এ নিয়ে বিক্ষোভ চলে। সে দিন এমএসভিপি পলাশ দাসের কক্ষে ঢুকে বিক্ষোভ দেখান সামিনার পরিজনেরা। যদিও কর্তৃপক্ষের অনুরোধ সত্ত্বেও তাঁরা কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি। এরই প্রতিবাদে এ দিন সকাল থেকে জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি শুরু হয়। দুপুরে তাঁরা এমএসভিপি-র ঘরে গিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থানে বসেন। পাশাপাশি, নিরাপত্তার দাবিতে এমএসভিপি-র কাছে স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়।

জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, ১১ জুন রাতে যে রোগী মারা গিয়েছেন সিনিয়র চিকিৎসকদের নির্দেশ মতো তাঁর ঠিকমতো চিকিৎসা করা হয়েছে। সন্ধ্যার পরে রোগীর অবস্থার আরও অবনতি ঘটে।

আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, হাসপাতালের গেটে নিরাপত্তারক্ষী থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে শতাধিক রোগীর পরিজন হাসপাতালের ভিতরে ঢুকল। এমন অবস্থা হলে চিকিৎসকেরা কাজ করবেন কী ভাবে? জুনিয়র ডাক্তারেরা হাসপাতালে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের দাবি তোলেন।

সূত্রের খবর, ৯০ জন জুনিয়র ডাক্তার কর্মবিরতিতে যোগ দেন। ফলে, জরুরি বিভাগ ছাড়া সার্জারি, স্ত্রীরোগ, শিশু ও মেডিসিন বিভাগে পরিষেবা ব্যাহত হয়। মুরারইয়ের খানপুর থেকে মেয়েকে নিয়ে স্ত্রীরোগ বিভাগে চিকিৎসায় জন্য এসেছিলেন সেলিনা বিবি। জ্বরের রোগী নিয়ে তারাপীঠের খামেড্ডা থেকে মেডিসিন বিভাগ দেখাতে এসেছিলেন অনন্ত মাল। দু’জনেই জানান, এ দিন ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে থাকার পরে ডাক্তার দেখাতে পারেন।

এমএসভিপি বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের দাবির প্রতি আমার সহমত আছে। অভিযোগ হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত করেন। এ ক্ষেত্রে রোগীর পরিজনেরা কোনও অভিযোগ করেননি। তাঁরা উল্টে চিকিৎসকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। ফলে, হাসপাতালের চিকিৎসকেরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।’’

এমএসভিপি জানান, হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্য চার জন অতিরিক্ত পুলিশ কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, বিকেল চারটের পরে রামপুরহাট থানা থেকে স্থায়ী ভাবে পুলিশ পিকেটিংয়ের আশ্বাস পাওয়ার পরে এমএসভিপি-র ঘর থেকে ঘেরাও অবস্থান তুলে নেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ওঠে কর্মবিরতিও।

Advertisement
আরও পড়ুন