সুজন মাল ও রিজিয়া খাতুন। —নিজস্ব চিত্র
নববিবাহিত স্ত্রী-কে নিয়েই ঘরছাড়া হতে হয়েছে। এমনই অভিযোগ তুললেন বীরভূমের নলহাটি থানার শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা সুজন মাল। তাঁর অভিযোগ, তিনি হিন্দু হওয়ায় এই বিয়ে মানতে নারাজ স্ত্রী-র বাড়ির লোকজন। সুজনের আরও অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজন অত্যাচার চালাচ্ছে তাঁদের উপরে। এমনকি তাঁদের গ্রামছাড়া পর্যন্ত করা হয়েছে। তাঁর দাবি, এ নিয়ে থানাতে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু সুরাহা হয়নি।
দীর্ঘ দিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল শ্রীপুর গ্রামের সুজন এবং রাজিয়া খাতুনের। গত ২৫ জুন বিয়ে করেছেন তাঁরা। কিন্তু সুজনের অভিযোগ, বিয়ের পর দিন থেকেই ঘরছাড়া হতে হয়েছে তাঁদের। কারণ, তাঁদের বিয়ে মানতে নারাজ রাজিয়ার বাবা মুজিফর শেখ। সুজন বলেন, ‘‘ওর (রাজিয়া) বাবা, মা এবং আত্মীয়স্বজন আমাদের উপর অত্যাচার করছে। আমাদের গ্রামে ঢুকতে দিচ্ছে না। গত ১৩ জুলাই নলহাটি থানায় চিঠি লিখে জানিয়েছি। তাতে কোনও রকম সহায়তা পাইনি।’’
বিয়ের পর নাম বদলে রাজিয়া হয়েছেন রিয়া। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি প্রাপ্তবয়স্ক। আমরা স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছি। আমার নাম এখন রিয়া মাল। সুজনকে বিয়ে করায় আমার পরিবার এবং গ্রামবাসীদের একাংশ আমাদের উপর অত্যাচার করছে। পুলিশকেও জানিয়েছি। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমার পরিবার চায়, আমাদের মেরে ফেলতে। আমাদের গ্রামছাড়া করেছে।’’
নলহাটির বাড়ি ছেড়ে আপাতত রামপুরহাটে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে সুজন এবং তাঁর পরিবার। ইতিমধ্যে রাজিয়ায় বাবা মুজিফর সুজনের বিরুদ্ধে রামপুরহাট আদালতে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই মামলার তলবেই শনিবার রামপুরহাট আদালতে হাজিরা দেন সুজন। গোটা বিষয়টি নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল রাজিয়ার পরিবারের সঙ্গেও। তবে তাঁরা এ নিয়ে কথা বলতে নারাজ। এ নিয়ে বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।’’