Anubrata Mondal

পর পর পদে কেষ্ট, বাড়ছে প্রভাব?

শনিবার এসআরডিএ-র চেয়ারম্যান হিসেবেই বোলপুরের শিবপুর মৌজায় রাজ্য হস্তশিল্প মেলার উদ্বোধন করলেন অনুব্রত।

Advertisement
বাসুদেব ঘোষ 
শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:৩২
বোলপুরের শিবপুরে বিশ্ব ক্ষুদ্র বাজারে রাজ্যের হস্তশিল্প মেলা উদ্বোধনে অনুব্রত মণ্ডল, জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ ও জেলাশাসক বিধান রায়। শনিবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

বোলপুরের শিবপুরে বিশ্ব ক্ষুদ্র বাজারে রাজ্যের হস্তশিল্প মেলা উদ্বোধনে অনুব্রত মণ্ডল, জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ ও জেলাশাসক বিধান রায়। শনিবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

Advertisement

জামিনে মুক্তি পেয়ে বীরভূমে ফিরে তিনি ফিরে পেয়েছেন শাসক দলের জেলা সভাপতির পদ। হয়েছেন জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য। এ বার ফের রাজ্য গ্রামোন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসআরডিএ) চেয়ারম্যান পদে অনুব্রত মণ্ডল। গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার ও জেল হওয়ার পরে দু’বছরের বেশি সময় পরে ফের তাঁকে এই পদেই বহাল রাখা হল বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

শনিবার এসআরডিএ-র চেয়ারম্যান হিসেবেই বোলপুরের শিবপুর মৌজায় রাজ্য হস্তশিল্প মেলার উদ্বোধন করলেন অনুব্রত। অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে থাকা কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “উনি এই পদে আগের থেকেই ছিলেন। জেলায় ফিরে আসার পরে আবার সেই পদে তাঁকে বহাল রাখা হয়েছে। এটুকু বলতে পারি।” অনুব্রতের কথায়, ‘‘আমার অনুপস্থিতিতে এই পদে অন্য কাউকে বসানো হয়েছিল বলে আমার জানা নেই। আমি ছিলাম, আমিই আছি।”

কিন্তু, জেলায় ফিরেই অনুব্রতের পরপর দলের জেলা সভাপতি, কোর কমিটির সদস্যপদ এবং এসআরডিএ-র চেয়ারম্যান পদ ফিরে পাওয়া নিয়ে জেলা তৃণমূলের অন্দরে চর্চা চলছে। তাঁর অনুগামীদের দাবি, ‘কেষ্টদার’ প্রভাব ফের বাড়তে শুরু করেছে জেলায়।

ঘটনা হল অনুব্রত দু'বছর জেলবন্দি থাকলেও এর মধ্যে এসআরডিএ-র চেয়ারম্যান পদে অন্য কাউকে বসানো হয়নি। পুজোর আগে জামিনে মুক্ত হয়ে জেলায় ফেরেন অনুব্রত। জেলায় ফেরার পরে তাঁকে দেখা গিয়েছিল বেশ কিছু সরকারি অনুষ্ঠানে। তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছিস। সরকারি অনুষ্ঠানে কোন পদাধিকার বলে তিনি যোগ দিয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। তবে, রাজ্য সরকারের এই সংস্থার চেয়ারম্যান পদে অনুব্রতকে বহাল রাখার পরে জল্পনার অবসান ঘটবে বলেই মনে করছেন তাঁর অনুগামীরা।

যদিও এ নিয়ে বিরোধীরা কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, “তৃণমূলের আদর্শ বলে কিছু নেই। যাঁরা যত দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকবেন, তাঁরা তত বেশি পদ পাবেন। এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি। এ ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “জেলা চালানোর ক্ষেত্রে কে বেশি দক্ষ হবেন, এই নিয়ে তাঁদের দলে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর অনুব্রত মণ্ডলকে দিয়েই জেলা চালানো হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই তাঁকে ফের সরকারি পদে বসিয়ে সব বিষয় যুক্ত থাকার সুযোগ করে দেওয়া হল।”

এ দিন বিকেলে শিবপুর মৌজায় বিশ্ব ক্ষুদ্র বাজারে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনুব্রতের সঙ্গে ছিলেন জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ, জেলাশাসক বিধান রায়, ক্ষুদ্র মাঝারি বস্ত্র শিল্প দফতরের বিশেষ সচিব দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মেলা চলবে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। মেলায় কালিম্পং, হুগলি, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে ২৫টি হস্তশিল্পের স্টল করা হয়েছে। মেলা উদ্বোধন করে অনুব্রত বলেন, “বীরভূমের কুটির শিল্প অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, সেটা আপনারা সোনাঝুরি হাটে গেলেই বুঝতে পারবেন। আমি জেলাশাসক ও মন্ত্রীকে বলব, সোনাঝুরি হাট সপ্তাহে দু’দিন বন্ধ রেখে বিশ্ববাংলায় যাতে ওই শিল্পীদের নিয়ে আসা হয়। তা হলে এখানকার অনেক পরিবর্তন হবে।’’ বিশ্ব ক্ষুদ্র বাজার চত্বরের সৌন্দর্যায়নের জন্য নানা ধরনের গাছ লাগানোর পরামর্শনও দেন অনুব্রত।

Advertisement
আরও পড়ুন