bankura

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর পরিবারকে কাটারির কোপ, ছাড় নেই ছাত্রেরও! সরস্বতীর ভাসান ঘিরে ‘কুরুক্ষেত্র’

অভিযোগ, প্রতিমা বিসর্জনের সময় জোরে মাইক বাজানো হচ্ছিল। এর প্রতিবাদ জানায় স্থানীয় এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর পরিবার। প্রথমে দুই পক্ষের বচসা শুরু হয়। তার পর চলে মারধর।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৪:৫৯
attack

জখম উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যেরা। —নিজস্ব চিত্র।

সরস্বতীর প্রতিমা বিসর্জনে উচ্চস্বরে মাইক বাজানো হচ্ছিল। তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে কাটারির কোপ খেতে হল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর পরিবারের তিন সদস্যকে। মারধর করা হয় পরীক্ষার্থীকেও। এমনই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল বাঁকুড়ার পাত্রসায়র থানার কান্তার গ্রামে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, বাঁকুড়ার পাত্রসায়র ব্লকের কান্তার গ্রামে মঙ্গলবার সরস্বতী পুজোর প্রতিমা নিরঞ্জনের ব্যবস্থা করেছিলেন পুজো উদ্যোক্তারা। অভিযোগ, প্রতিমা বিসর্জনের সময় জোরে মাইক বাজানো হচ্ছিল। এর প্রতিবাদ জানায় স্থানীয় এক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর পরিবার। প্রথমে দুই পক্ষের বচসা শুরু হয়। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যে পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে দু’জন, কৃষ্ণপদ ঘোষ এবং ধীরু ঘোষ মিলে কাটারি নিয়ে ওই পরীক্ষার্থীর পরিবারের উপর চড়াও হন। পরীক্ষার্থীর দাদা সঞ্জীব ঘোষ, কাকা হারাধন ঘোষ এবং দাদু শান্তিচরণ ঘোষ জখম হলে প্রথমে তাঁদের পাত্রসায়র ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। পরে আহত তিন জনকেই চিকিৎসার জন্য বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। আহতদের পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার ধৃতদের বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছে।

ঘটনায় আহত পরীক্ষার্থীর কাকা হারাধন ঘোষ বলেন, ‘‘জোরে মাইক বাজিয়ে গ্রামে সরস্বতীর প্রতিমা বিসর্জন হচ্ছিল। ভাইপোর পড়াশোনায় অসুবিধা হচ্ছে জানিয়ে আমরা মাইক বন্ধ করতে বলেছিলাম। পাড়ার একটা বড় অংশ মাইক বন্ধ করতে চাইলেও কয়েক জন মত্ত যুবক আমাদের উপর চড়াও হয়। মারধর করে। কাটারির কোপ মারে আমাদের। এমনকি, পরীক্ষার্থীকেও ছাড়েনি! আমরা তিন জন গুরুতর আহত হলেও ভাইপোর তেমন আঘাত না লাগায় সে পরীক্ষা দিতে পারছে।’’ ওই পরীক্ষার্থীর দাদু শান্তিচরণ ঘোষ বলেন, ‘‘পরীক্ষার সময় মাইক বাজানো বন্ধের নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশকে কয়েক জন মত্ত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শুধু যে মাইক বাজাচ্ছিল তাই নয়, প্রতিবাদ জানানোয় আমাদের মারধর করেছে। আমরা এই ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।’’

এই ঘটনায় অভিযুক্তদের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘‘মঙ্গলবার মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করে ওই গ্রামে দুই তরফে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এক তরফে আমরা যে অভিযোগ পেয়েছি, তার ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর পক্ষের কোনও অভিযোগ মেলেনি। ঘটনাস্থল থেকে মাইকের সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, এর পিছনে দুই পক্ষের মধ্যে পুরনো কোনও পারিবারিক শত্রুতা থেকে থাকতে পারে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’’

আরও পড়ুন
Advertisement