— প্রতীকী চিত্র।
জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদের মীমাংসা করতে গিয়ে বৃদ্ধকে খুনের ঘটনায় এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দিল বাঁকুড়া জেলা আদালত। বাঁকুড়ার ছাতনা থানার উপরগড়্যা গ্রামে ২০২১ সালে ঘটে যাওয়া সেই খুনের ঘটনার তিন বছরের মাথায় বৃহস্পতিবার সুশান্ত রায় নামের ওই যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। শুক্রবার বিচারক তাঁকে যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, উপরগড়্যা গ্রামের বাসিন্দা সব্যসাচী রায়ের পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমার মালিকানা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিবাদ ছিল গ্রামেরই হরিপদ রায়ের পরিবারের। অভিযোগ, ২০২১ সালের ১১ অগস্ট হরিপদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা সব্যসাচীর পরিবারের উপর চড়াও হন। পরে মীমাংসার জন্য ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন সব্যসাচীর দাদা তারাপদ রায়। সেই সময় আচমকাই হরিপদ ও তাঁর ছেলে সুশান্ত রায় তারাপদের উপর চড়াও হন। সুশান্ত কুড়ুল নিয়ে পিছন থেকে মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তারাপদ। পরে তাঁকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় সুশান্ত ও তাঁর বাবা হরিপদের বিরুদ্ধে ছাতনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মৃতের পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ঘটনার তিন মাসের মধ্যে ২০২১ সালের ১৩ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা করে পুলিশ। এর পর থেকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে মামলা চলতে থাকে। সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে ঘটনার তিন বছরের মাথায় বৃহস্পতিবার তারাপদ খুনে সুশান্ত রায় ও তাঁর বাবা হরিপদ রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত।
আদালতের সরকারি আইনজীবী রথীন দে বলেন, ‘‘আদালত সমস্ত তথ্যপ্রমাণ ও সাক্ষ্য গ্রহণের পর বৃহস্পতিবার ওই দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। শুক্রবার আদালত অভিযুক্ত সুশান্ত রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে। একই ঘটনায় অপর অভিযুক্ত হরিপদকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস কারাদণ্ড দিয়েছে।’’ মৃতের ছেলে দয়াময় রায় বলেন, ‘‘আদালতের রায়ে আমরা খুশি। হরিপদ রায়কেও সুশান্ত রায়ের মতো যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলে আরও ভাল হত।’’