Tiger in Bankura

স্থায়ী বাসস্থানের খোঁজেই বাংলার দুয়ারে বাঘ! জ়িনতের ‘প্রেমিক’-এর গতিবিধি বনকর্মীদের নজরে

দিন কয়েক আগেই একটি বাঘ ঝাড়খণ্ড হয়ে ঝাড়গ্রামে প্রবেশ করে। বনকর্মীদের মতে, বাঘিনি জ়িনতের খোঁজেই সে বাংলায় ঢুকেছে। তার পর থেকে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে জ়িনতের ‘প্রেমিক’।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:১১
Are tigers repeatedly entering the forest in search of a permanent home in Bengal

বাঘের আতঙ্কে গ্রামবাসীরা। — প্রতীকী ছবি।

বাসস্থানের খোঁজেই কি বার বার জঙ্গলমহলে ঢুকে পড়ছে বাঘ? অন্তত বনকর্মীদের প্রাথমিক অনুমান সেটাই। গত এক মাসে জঙ্গলমহল এলাকায় তিন বার বাঘ হানা দিয়েছে। কেন বার বার পড়শি রাজ্য থেকে বাঘ ঢুকে পড়ছে বাংলায়, তা ভাবাচ্ছে বন দফতরকে। তবে সম্প্রতি যে বাঘটি ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাকে আপাতত বন্দি করতে চাইছে না তারা। কড়া নজরদারিতে রাখা হচ্ছে তাকে। একই সঙ্গে স্থানীয়দের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করাই লক্ষ্য বন দফতরের।

Advertisement

২০১৮ সালে একটি বাঘ সিমলাপাল হয়ে প্রবেশ করেছিল ঝাড়গ্রামে। সে বার ওই বাঘের প্রাণ গিয়েছিল লালগড়ের বাসিন্দাদের হাতে। তার পর থেকেই ঝাড়গ্রামে বাঘ ঢুকলে সজাগ হয়ে পড়ে বন দফতর। সেই ঘটনার পর ২০২৪ সালের শেষের দিকে ওড়িশার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে প্রথমে ঝাড়গ্রামে ঢুকে পড়েছিল বাঘিনি জ়িনত। পরে পুরুলিয়া হয়ে সে পৌঁছয় বাঁকুড়ায়। বেশ কয়েক দিন লুকোচুরির পর বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ব্লকের গোঁসাইডিহি গ্রাম সংলগ্ন জঙ্গলে বন দফতরের ছোড়া ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু হয় জ়িনত। পরে তাকে সুস্থ করে আবার সিমলিপালে ফেরত পাঠানো হয়।

কিন্তু তার পরও কাটেনি বাঘের আতঙ্ক। দিন কয়েক আগেই একটি বাঘ ঝাড়খণ্ড হয়ে ঝাড়গ্রামে প্রবেশ করে। বনকর্মীদের মতে, বাঘিনি জ়িনতের খোঁজেই সে বাংলায় ঢুকেছে। তার পর থেকে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে জ়িনতের ‘প্রেমিক’। বার বার নিজের অবস্থান বদল করছে সে। বন দফতরের মুখ্য বনপাল (কেন্দ্রীয় চক্র) এস কুলানডাইভেল বলেন, ‘‘বাঘটি খুব দ্রুত তার অবস্থান বদল করছে। সম্ভবত বাঘটি বিভিন্ন জঙ্গল ঘুরে তার নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান করছে।’’ কিন্তু কেন? কুলানডাইভেল বলেন, ‘‘মধ্য ভারতের যে এলাকায় বাঘ রয়েছে, সেই এলাকার জঙ্গলের সঙ্গে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়া জেলার জঙ্গলের বিশেষ একটা ফারাক নেই। জঙ্গলে ঝোরা এবং অসংখ্য বন্যপ্রাণী থাকায় খাবার ও পানীয় জলেরও অভাব নেই।’’ বনপালের অনুমান, যদি বাংলার জঙ্গলে নিরাপদ আশ্রয় পায় ওই বাঘ তবে এখানেই থেকে যেতে পারে সে।

এ হেন পরিস্থিতিতে বাঘটিকে এখনই বন্দি করতে রাজি নন বনকর্মীরা। তার গতিবিধির উপর কড়া নজরদারি চালানোর পরিকল্পনা করেছে বন দফতর। এ প্রসঙ্গে কুলানডাইভেল বলেন, ‘‘এই বাঘটির গলায় রেডিও কলার নেই। তাই তার সঠিক অবস্থান জানা বেশ কঠিন। বন দফতরের যথেষ্ট সংখ্যক কর্মী নজরদারির জন্য মোতায়েন রয়েছেন। বাঘটি মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলছে। মানুষ বা গবাদি পশুরও কোনও ক্ষতি করেনি। তাই এখনই বাঘটিকে ধরার কোনও পরিকল্পনা নেই।’’

Advertisement
আরও পড়ুন