লাভপুর মজুমদার ডাঙ্গায় দিনমজুরের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
আবাস যোজনায় নাম উঠেছিল। টাকাও এসেছিল। কিন্তু যে টাকা পাননি লাভপুরের মজুমদারডাঙা আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর রবাই হেমব্রম। রবাইয়ের অভিযোগ, তিনি সিপিএম করেন বলে টাকা পাননি। তাঁর দাবিকে সমর্থন করেছে সিপিএম। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। প্রশাসনের দাবি, রবাই ‘আইডি’তে অন্য এক মহিলার অ্যাকাউন্ট নম্বর এন্ট্রি হয়ে যাওয়ায় তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা চলে গিয়েছে। শীঘ্রই প্রকৃত উপভোক্তার হাতে টাকাটা তুলে দেওয়া হবে।
প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০২৩ সালে গ্রামের রবাইয়ের নামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু তাঁর ‘আইডি’তে স্থানীয় অন্য এক মহিলার অ্যাকাউন্ট নম্বর বসিয়ে দেওয়ায় তিনি টাকা পাননি। ওই মহিলার অ্যাকাউন্টে দু’দফায় ওই ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ঢুকে যায়। রবাইয়ের অভিযোগ, এর পর থেকে প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরেও তিনি বাড়ি তৈরির টাকা পাননি। এমনকি, নতুন ভাবে আবেদন করেও আবাস প্লাস যোজনার তালিকায় তাঁর নাম ওঠেনি। ফলে, অসুবিধায় দিন কাটছে ওই দিনমজুরের পরিবারের।
খড়ের চালের মাটির বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা, স্ত্রীকে নিয়ে বাস রবাইয়ের। দীর্ঘদিন আগেই চালের খড় পচে গিয়েছে। নতুন করে চাল ছাওয়ানোর সামর্থ্য নেই। তাই মাথা বাঁচাতে চালের উপরে ত্রিপল কিনে চাপিয়েছেন। রবাইয়ে অভিযোগ, ‘‘আমি সিপিএম করি বলে আমার ঘরের টাকা অন্যের অ্যাকাউন্ট ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রশাসনের সকল স্তরের জানিয়েও সে টাকা ফেরত পাইনি। নতুন আবাস যোজনাতেও নাম ওঠেনি।’’
স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সৈয়দ মাহাফুজুল করিম বলেন, ‘‘শুধু ওই দিনমজুরই নয়, রাজনৈতিক আক্রোশে বহু প্রকৃত দুঃস্থ ব্যক্তি আবাস যোজনার টাকা পাচ্ছেন না। অথচ শাসকদলের ছত্রছায়ায় থাকা বহু অবস্থাপন্ন পাকাবাড়ির মালিক অনুদান পাচ্ছেন।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তরুণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে আমাদের কোনও ভূমিকা নেই। ব্যাপারটি প্রশাসন দেখছে।’’
বিডিও শিশুতোষ প্রামাণিক বলেন, ‘‘ভুলক্রমে ওই ব্যক্তির টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে ঢুকে গিয়েছিল। বিষয়টি জানার পরে টাকা ফেরানো হয়েছে। শীঘ্রই প্রকৃত উপভোক্তার হাতে টাকাটা তুলে দেওয়া হবে।’’