arrest

ভিন্‌ রাজ্যে বেনামে সিমকার্ড কিনেও শেষ রক্ষা হল না! বাঁকুড়া পুলিশের জালে গাড়ি চুরি চক্রের চার পাণ্ডা

বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৭ মার্চ বিকেলে কলকাতার গিরিশ পার্ক এলাকা থেকে ক্যাব বুক করে পুরুলিয়া জেলার ঝালদার উদ্দেশে রওনা দেন তিন যুবক।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪ ২৩:৩৩

—প্রতীকী ছবি।

ক্যাব চালককে হাত-পা বেঁধে জঙ্গলে ফেলে রেখে গাড়ি চুরি করে নিয়ে চম্পট দিয়েছিলেন যাত্রী সেজে গাড়িতে ওঠা তিন যুবক। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে আন্তঃরাজ্য গাড়ি চুরি চক্রের চার পাণ্ডাকে বিহার থেকে গ্রেফতার করল বাঁকুড়া জেলা পুলিশ। প়ড়শি রাজ্যে হানা দিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে খোয়া যাওয়া গাড়িটিও ।

Advertisement

বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৭ মার্চ বিকেলে কলকাতার গিরিশ পার্ক এলাকা থেকে ক্যাব বুক করে পুরুলিয়া জেলার ঝালদার উদ্দেশে রওনা দেন তিন যুবক। ক্যাব চালক গাড়ি নিয়ে ঝালদা যাওয়ার পথে বাঁকুড়ার বিহারীনাথের কাছে সুনসান রাস্তায় আচমকাই স্বমুর্তি ধারণ করেন ওই তিন যাত্রী। ক্যাব চালককে ছুরি দেখিয়ে তাঁর কাছে থাকা দু’টি মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা নিয়ে নেন তাঁরা। এর পর ক্যাব চালকের হাত-পা বেঁধে তাঁকে রাস্তার ধারে ঝোপের মধ্যে ফেলে দিয়ে গাড়ি চালিয়ে চম্পট দেন। পরের দিন স্থানীয়েরা দেখতে পেয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন। এর পর বাঁকুড়ার শালতোড়া থানায় গোটা ঘটনা জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন ক্যাব চালক সম্রাট মিশ্র।

পুলিশ জানিয়েছে, অত্যন্ত নিখুঁত পরিকল্পনা করে বিহারের ওই তিন যুবক ঘাঁটি গেড়েছিল নিয়েছিল কলকাতায়। ক্যাব বুক করতে যে মোবাইল নম্বর দুষ্কৃতীরা ব্যবহার করেছিলেন, তার সূত্র ধরে তদন্ত শুরু হয়। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, দুষ্কৃতীরা বিহার থেকে বেনামে সংগ্রহ করা সিম কার্ড ব্যবহার করছিলেন। তার সূত্র ধরেই পুলিশ বিহারের বাঁকা জেলায় পৌঁছয়। যে চক্রের মাধ্যমে দুষ্কৃতিীরা এই বেনামি সিম কার্ড পেয়েছিলেন, সেই চক্রটিকেও চিহ্নিত করে পুলিশ। বাঁকা থেকে গ্রেফতার করা হয় বিকাশ কুমার ও বিজয় কুমারকে নামে দু’জনকে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই ঝাড়খণ্ডের গিরিডি এলাকার বাসিন্দা সঞ্জিতকুমার রবিদাসের হদিস পায় পুলিশ। পুলিশ জানতে পারে, যে তিন যুবক গাড়ি চুরির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের অন্যতম এই সঞ্জিতকুমার। সঞ্জিতকে গিরিডি থেকে গ্রেফতারের পরেই গাড়ি চুরিকাণ্ডের একের পর এক জট কাটতে শুরু করে। সঞ্জিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে ক্যাব চালকের হাত-পা বেঁধে জঙ্গলে ফেলে দেওয়ার পর গাড়ি নিয়ে তাঁরা সটান রওনা দিয়েছিল বিহারের পুর্ব চম্পারণ জেলার দিকে। সেখানেই এক মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে তাঁরা চুরি করা গাড়িটি লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি করে দেন স্থানীয় বিকাশ সাহানির কাছে। সম্প্রতি বিহারের পুর্ব চম্পারণ জেলায় হানা দিয়ে চোরাই গাড়ির ক্রেতা বিকাশ সাহানিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিকাশ সাহানির বাড়ির কাছ থেকে আটক করা হয় চুরি যাওয়া গাড়িটিকেও। আটক হওয়া গাড়ি-সহ বিকাশ সাহানিকে শুক্রবার বাঁকুড়ায় নিয়ে এসে শনিবার বাঁকুড়া জেলা আদালতে পেশ করে পুলিশ ।

বাঁকুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিদ্ধার্থ দর্জি বলেন, “গাড়ি চুরি চক্রে একে একে মোট চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন জন আপাতত জেল হেফাজতে রয়েছেন। চোরাই গাড়ির ক্রেতা বিকাশ সাহানিকে শনিবার আদালতে পেশ করা হচ্ছে । গাড়ি চুরির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকা অপর দুই অভিযুক্তকেও চিহ্নিত করার কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। গোটা ঘটনার কিং পিনকেও আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। আশা করি দ্রুত তাদের আমরা গ্রেফতার করতে পারব।”

আরও পড়ুন
Advertisement