দ্বিতীয় বার গ্রেফতার হওয়ার পর (বাঁ দিকে) বিকাশ সিংহ এবং উত্তম সর্দার (ডান দিকের পিছনে কালো জামা পরিহিত ব্যক্তি)। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা উত্তম সর্দার এবং বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহকে ১০ দিনের জন্য পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়েছিল। জামিন পাওয়ার পরেও কেন ওই দু’জনকে আবার গ্রেফতার করা হল, তার ব্যাখ্যা দিল রাজ্য পুলিশ। সমাজমাধ্যমে রাজ্য পুলিশের তরফে এ-ও দাবি করা হয়েছে যে, উত্তম এবং বিকাশের দ্বিতীয় বার গ্রেফতারি নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।
সন্দেশখালিতে পৃথক অভিযোগে গত শনিবার গ্রেফতার হন বিকাশ এবং উত্তম। সোমবার তাঁদের আদালতে করানো হলে বিচারক দু’জনেরই জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। কিন্তু তার কিছু ক্ষণ পর আদালতের সামনে থেকে বিকাশকে আবার গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে বসিরহাট থানার পুলিশ গাড়িতে তুলতে গেলে বিজেপি নেতার পরিবারের সদস্য ও দলীয় কর্মীরা বাধা দেন। উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তার মধ্যে শেষমেশ বিকাশকে নিয়ে থানায় চলে যায় পুলিশ। এই ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিজেপি। এর কিছু ক্ষণ পর শোনা যায় জামিনে মুক্ত উত্তমকেও আবার গ্রেফতার করা হয়েছে।
Wilful misinformation is being spread by a section of the media that police custody was not sought for the two arrestees sent forward to the Ld Court today in the Sandeshkhali incident. This is absolutely false and misleading……(1/3)
— West Bengal Police (@WBPolice) February 12, 2024
কিন্তু জামিনের পর কেন গ্রেফতার করা হল দু’জনকে? তাঁদের বিরুদ্ধে কি অন্য কোনও মামলা রয়েছে? সোমবার রাতে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে পুলিশ জানিয়েছে, সন্দেশখালির ঘটনায় ধৃত উত্তম এবং বিকাশকে হেফাজতে চাওয়া হয়নি বলে যে তথ্য ছড়িয়েছে, তা ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ এবং ‘বিভ্রান্তিকর’।
পুলিশ ওই পোস্টে দাবি করেছে, ধৃতদের দু’জনেরই ১০ দিনের পুলিশি হেফাজত চাওয়া হয়। কিন্তু আদালত তাঁদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে। পুলিশ এ-ও জানিয়েছে, ওই দু’জনের বিরুদ্ধে গত কয়েক দিনে সন্দেশখালিতে নথিভুক্ত বেশ কয়েকটি গুরুতর ফৌজদারি মামলা রয়েছে।
সন্দেশখালিতে অশান্তিতে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে শনিবার গ্রেফতার হন বিজেপি নেতা বিকাশ। তিনি ছিলেন বসিরহাট বিজেপি সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সভাপতি। বর্তমানে তিনি বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির পর্যবেক্ষক। সন্দেশখালি থানার সামনেই তাঁর বাড়ি। জামিন পাওয়ার পর বিকাশ জানান, নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। তার অব্যবহিত পরেই তাঁকে আবার গ্রেফতার করে পুলিশ।
অন্য দিকে, শাহজাহান শেখ এবং তাঁর দুই ঘনিষ্ঠ নেতা শিবু হাজরা আর উত্তমের বিরুদ্ধেও এলাকায় ‘অত্যাচার’-এর অভিযোগ রয়েছে। যে অভিযোগে গত কয়েক দিন ধরে উত্তপ্ত সন্দেশখালি। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা তাঁদের গ্রেফতারির দাবি তুলেছিলেন। সেই দাবি নিয়ে রাস্তায় নামেন তাঁরা, ঘেরাও করা হয় থানা। ঘটনাক্রমে শনিবার দুপুরে রেড রোডে তৃণমূলের ধর্নামঞ্চ থেকে পার্থ ভৌমিক ঘোষণা করেছিলেন, আগামী ছ’বছরের জন্য তাঁদের দল থেকে উত্তমকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। তার অব্যবহিত পর উত্তম গ্রেফতার হন। তবে এখনও শাহজাহানের মতোই ‘বেপাত্তা’ শিবু। কিন্তু সেই শিবুর দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দার এবং তিন গ্রামবাসী গ্রেফতার হন। সোমবার তাঁদেরও জামিন দিয়েছে আদালত।