Partha Chatterjee

তছরুপের আইন নখদর্পণে, পার্থের হয়ে মামলা লড়তে এলেন যিনি, এককালে তাঁর কথা শুনে চলত ইডি

Advertisement
সারমিন বেগম
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৩ ১৩:৫৯
(বাঁ দিকে)  শামসুদ্দিন শামস এবং (ডান দিকে) পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

(বাঁ দিকে) শামসুদ্দিন শামস এবং (ডান দিকে) পার্থ চট্টোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

জুলাই ২০২২ থেকে জুলাই ২০২৩— এক বছরের বন্দিদশা পেরিয়ে কি অবশেষে স্বস্তি পাবেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়? সম্প্রতি পার্থের মামলায় দিল্লি থেকে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর হয়ে মামলা লড়তে এসেছেন অভিজ্ঞ আইনজীবী। সঙ্গে রয়েছেন এত দিন পার্থের হয়ে সওয়াল করা সেলিম রহমান। বৃহস্পতিবারই প্রথম শামসুদ্দিন আদালতে সওয়াল করতে চলেছেন পার্থের হয়ে। ইডির মামলায় নগর দায়রা আদালতে পার্থের হয়ে জামিনের আবেদন করবেন তিনি। এই আইনজীবীর পুরনো রেকর্ড ঘেঁটে পার্থের ঘনিষ্ঠ মহলে প্রশ্ন, পার্থকে কি স্বস্তি দিতে পারবেন তিনি?

নাম শামসুদ্দিন শামস। ৩৪ বছর ধরে আইনের দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত। নিজস্ব আইনি পরিষেবা দেওয়ার সংস্থাও রয়েছে। তবে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে গবেষণা করে পিএইচডি করা শামসুদ্দিনের আরও অনেকগুলি পরিচয় রয়েছে। যে ইডির বিরুদ্ধে পার্থের হয়ে মামলা লড়তে এসেছেন তিনি, সেই ইডির সঙ্গে প্রায় দু’দশক ধরে নিয়মিত ওঠাবসা ছিল তাঁর। প্রায় ২০ বছর ইডির আইনি বিভাগের মাথায় ছিলেন শামস। যে কোনও আর্থিক মামলায় ইডি কী আইনি পদক্ষেপ করবে, তা জানতে শামসুদ্দিনেরই দ্বারস্থ হতে হত ইডিকে।

Advertisement

আবার আর্থিক দুর্নীতি প্রতিরোধে দেশের যে আইন, সেই ‘প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট’ বা আর্থিক তছরুপ আইনের খসড়া তৈরির অন্যতম মাথা ছিলেন শামসুদ্দিন। ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ সালে ওই আইনের বিলের খসড়া তৈরি করেন। আবার ২০০০ সালে এই বিলকে আইনে পরিণত করার সময় যে বিশেষজ্ঞ দলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তারও সদস্য ছিলেন শামসুদ্দিন। ‘ফেরা’, ‘ফেমা’ এবং ‘পিএমএলএ’ সংক্রান্ত দেশের যত হাই প্রোফাইল মামলা, সেই সব মামলাতেও ইডির প্রতিনিধি হিসাবে থাকতেন তিনি। এহ বাহ্য, আর্থিক দুর্নীতির প্রতিরোধের আইন বানাতে সাহায্য করেছিলেন যিনি, সেই শামসুদ্দিনই এখন বাংলার অন্যতম বৃহৎ আর্থিক দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থের হয়ে সওয়াল করতে আসছেন।

এর আগেও পার্থের হয়ে জামিনের মামলা লড়তে কলকাতায় এসেছেন শামসুদ্দিন। তবে সে দিন বন্ধ হয়ে যায় পার্থের মামলার শুনানি। পরবর্তী মামলা দিন ঠিক হয় ২০ জুলাই। বৃহস্পতিবার সেই দিন। আদালত সূত্রে খবর, পার্থের মামলা লড়তে ইতিমধ্যেই শহরে এসে পৌঁছেছেন শামসুদ্দিন।

উল্লেখ্য, গত বছর তাঁর দলের ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠানের ঠিক দু’দিন পর রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। এক বছর পর আরও একটি ২১ জুলাই এসে উপস্থিত। ইতিমধ্যে বহু বার পার্থের জামিনের আবেদন না-মঞ্জুর হয়েছে। বৃহস্পতিবার আবার আদালতে উঠতে চলেছে পার্থের জামিন মামলা। এখন দেখার নতুন আইনজীবীর সওয়াল পার্থের জন্য স্বস্তি আনতে পারে কি না।

আরও পড়ুন
Advertisement