বিয়ের দেড় বছর পরেও মেলেনি রূপশ্রীর টাকা! — প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
বিয়ের পর পেরিয়ে গিয়েছে দেড় বছর। এই দীর্ঘ সময় ধরে দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেও মেলেনি রুপশ্রীর টাকা। এমনকি, তিন হাজার টাকা ‘কাটমানি’ দেওয়ার পরেও প্রাপ্য টাকা মেলেনি! এ বার ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে রূপশ্রী প্রকল্পে দুর্নীতির এমনই অভিযোগ তুললেন মালদহের বধূর মা।
রুকসানা খাতুন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের রাঙ্গাইপুরের বাসিন্দা। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে বিয়ে হয়েছিল রুকসানার। সে সময়েই রূপশ্রী প্রকল্পে আবেদন করেছিলেন। অভিযোগ, আবেদনের সময় তিন হাজার টাকা ‘কাটমানি’ও দিতে হয়েছিল! কিন্তু তা সত্ত্বেও বাতিল হয়ে যায় আবেদন। বিয়ের দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও সেই টাকা মেলেনি। তার পরেও হাল ছাড়েনি তরুণীর পরিবার। একাধিকবার প্রশাসনিক দফতরে ঘুরেছেন রুকসানার মা নূরেশা বিবি। অভিযোগ, প্রতি বারই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি। শেষমেশ শনিবার ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে অভিযোগ জানান ওই বধূর মা। অভিযোগ, এলাকা জুড়ে একাধিক দালাল চক্র সক্রিয় রয়েছে। ফলে সরকারি নানা প্রকল্পে আবেদন করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। কখনও টাকা দিলে তবেই প্রকল্পের সুবিধা মেলে। আবার অনেক ক্ষেত্রে টাকা দিয়েও কাজ হয় না।
অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। এলাকার বিজেপি নেতৃত্বের কটাক্ষ, তৃণমূল আমলে কাটমানি ছাড়া কিছু হয় না। যদিও তৃণমূলের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং বলেছেন, সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধা পাওয়ার জন্য কাউকে টাকা দেওয়ার দরকার নেই। তার পরেও এরকম অভিযোগ উঠছে। যারা এই কাজ করেছে, প্রশাসন খতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে। মালদহের জেলাশাসকও বিষয়টি তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশের পরেও বার বার সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসছে। সেই আবহেই গত ২৪ জানুয়ারি থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির। রাজ্য সরকারের ৩৭টি প্রকল্প এবং পরিষেবা পাওয়ার জন্য এই শিবিরগুলিতে আবেদন করা যাবে। সেই শিবির সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনার জন্য শনিবার কিছু নির্দেশও দিয়েছে নবান্ন।