Former TMC MLA Mitali Roy joins BJP

‘প্রেম নেই তবু পদ্মে’! কেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে, মিতালির স্পষ্ট স্বীকারোক্তি আনন্দবাজার অনলাইনে

২০২১ সালে ভোটে হারার পর থেকে তৃণমূল তাঁকে কোনও কাজে লাগায়নি বলে অভিযোগ মিতালির। মানুষের স্বার্থে কাজ করার জন্যই তিনি বিজেপিতে যোগ দিলেন বলে জানিয়েছেন মিতালি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:০৬
দলের প্রতি টান নয়, মানুষের কাজ করতেই বিজেপিতে মিতালি।

দলের প্রতি টান নয়, মানুষের কাজ করতেই বিজেপিতে মিতালি। — নিজস্ব চিত্র।

শনিবার রাত পর্যন্ত যিনি তৃণমূলে ছিলেন, রবিবার সকালেই তিনি বিজেপিতে! ধূপগুড়িতে উপনির্বাচনের ঠিক ৪৮ ঘণ্টা আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন প্রাক্তন বিধায়ক মিতালি রায়। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপির নেতাদের উপস্থিতিতে রবিবার সকালে পদ্মপতাকা হাতে তুলে নেন মিতালি। তবে, এ নাকি প্রেমহীন যোগদান।

Advertisement

২০১২-তে তৃণমূলে যোগ দেন মিতালি। ২০১৬ সালে তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে ধূপগুড়ি বিধানসভায় জেতেন তিনি। কিন্তু ২০২১ সালের ভোটে নিজের আসন ধরে রাখতে পারেননি। মিতালির অভিযোগ, ভোটে হারার পর থেকেই তাঁকে ব্রাত্য করে রাখা হয়েছিল। উপনির্বাচনেও তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়নি। এর পর তিনি দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। পাশাপাশি মিতালি স্পষ্ট জানিয়েছেন, বিজেপির প্রতি রাজনৈতিক বা অন্য কোনও টান তাঁর নেই। তৃণমূলের প্রতি ক্ষোভ থেকেই তিনি গেরুয়া শিবিরে যোগ দিলেন। আনন্দবাজার অনলাইনকে মিতালি বলেছেন, ‘‘বিজেপির প্রতি আমার কোনও টান নেই। তৃণমূল তিন বছর ধরে আমাকে ঘরে বসিয়ে রেখেছে। না সংগঠন, না প্রশাসন— আমাকে কোনও কাজেই লাগানো হয়নি। কাজ করতে চাই বলে বিজেপিতে এসেছি। এটাই বাস্তব, এখানে ইমোশনের কোনও জায়গা নেই।’’ মিতালির আরও দাবি, তাঁর সম্পর্কে সমস্ত খবর সম্পর্কেই মুখ্যমন্ত্রী অবহিত। তিনি বলছেন, ‘‘দিদি এখন ব্যস্ত। আমাদের মতো লোকেদের সঙ্গে কথা বলার মতো সময় ওঁর নেই। দিদি যখন সারা পশ্চিমবঙ্গের খবর রাখেন, তখন আমার খবর নিশ্চয়ই তাঁর কাছে আছে। দল সবই জানে।’’

মিতালির দাবি, ২০২১-এর ভোটে হারার পর থেকে তাঁকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ধূপগুড়িতে প্রচারে এসে জনসভা থেকে প্রকাশ্যে মিতালির খোঁজ করেছিলেন। তার পরেই তৃণমূল নড়েচড়ে বসে। তাঁকে জোর করে প্রচারে নামানো হয়। অভিষেক তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানতে পেরেছিলেন। কিন্তু শনিবার মঞ্চে আগাগোড়া হাজির থেকে অভিষেককে উত্তরীয় পরিয়েও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কোনও কথা বলতে পারেননি মিতালি। তার পরেই দলবদলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেন মিতালি। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের আমাকে আর প্রয়োজন নেই। উপনির্বাচনেও টিকিট দেয়নি। শুভেন্দুদা আমার খোঁজ করার পর দু’দিন প্রচারে নামিয়েছিল। গত কাল (শনিবার) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাতেও ছিলাম। শুনেছিলাম, আমার সঙ্গে কথা বলতে পারেন। কিন্তু আমার সঙ্গে কোনও কথা বলেননি।’’

তাই কি ক্ষোভে দলবদল? সে কথার সরাসরি জবাব দেননি মিতালি। যদিও তাঁর বক্তব্য থেকে পরিষ্কার, তৃণমূলে থেকে কাজ করতে না পারার কারণেই তাঁর দলত্যাগ। ধূপগুড়িতে শেষবেলার কয়েক ঘণ্টা প্রচারেও বিজেপি প্রার্থীকে জেতাতে পথে নামবেন তিনি বলে জানিয়েছেন। মিতালি বলেন, ‘‘২০২১-এর ভোটে তৃণমূলই বিজেপিকে জিতিয়েছিল। আমি প্রার্থী ছিলাম, হারিয়ে দিয়েছিল। এ বারও জনগণ ভোট দেবে। তৃণমূলই বিজেপিকে জেতাবে।’’

এত দিন জয় বাংলা, জয় মমতা স্লোগানে সভা মাতিয়ে তোলা মিতালি রাতারাতি দল বদলে জয় শ্রীরাম বলতেও প্রস্তুত। তাঁর যুক্তি, ‘‘এটা তো ভগবানের নাম!’’

আরও পড়ুন
Advertisement