মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ‘ওয়েসাইড ক্রাফট ভিলেজ’ বা এক ছাতার নীচে হস্তশিল্পের গ্রাম তৈরির নীতিগত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে পর্যটন দফতর৷ সরকারি সূত্রের খবর, দেড় বছর আগে, প্রথম বিষয়টি নিয়ে সরকারি স্তরে আলোচনা শুরু হয়। শেষে গত নভেম্বর মাসে কলকাতার বেঙ্গল গ্লোবাল বিজ়নেস সামিটের পরে, চলতি মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের সময় শিলিগুড়িতে নর্থবেঙ্গল বিজ়নেস সামিট হয়। সেখানেও পর্যটন দফতরের সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী বিষয়টি নিয়ে মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর উপস্থিতিতে বিভিন্ন দফতরের অফিসারদের সামনে আলোচনা করেন। হস্তশিল্পের গ্রাম ছাড়াও, রাজস্থানের জয়পুরের ‘চখি ধানি’ গ্রামের আদলে প্রকল্পটি তৈরি করা যায় কি না, দেখা হতে পারে বলে সচিব জানিয়েছিলেন।
রাজ্য পর্যটন দফতরের তরফে জেলা ধরে ধরে এর মধ্যে হস্তশিল্পের প্রচার, প্রসারের কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে পর্যটন উন্নয়ন নিগমের অতিথি নিবাসগুলিতে হস্তশিল্পের জন্য জায়গা বাছাই করে সেন্টার তৈরি হচ্ছে। শিলিগুড়ির মৈনাক, ডুয়ার্সের বাতাবাড়ির নাম এতে রয়েছে। এই সব অতিথি নিবাসে আসা পর্যটক বা সাধারণ বাসিন্দারাহস্তশিল্পের কাজ দেখা থেকে শুরু করে, তা কিনতেও পারবেন। এই চিন্তাভাবনাকেই এ বার বড় ভাবে হস্তশিল্পের গ্রাম তৈরি করে সামনে আনার কথা ভাবা হয়েছে।
পর্যটন দফতরের এক যুগ্ম সচিবের কথায়, ‘‘রাজস্থান, গুজরাতে এই ধরনের প্রকল্প তৈরি হয়েছে। এখানে সে রকমই কিছু করার কথা ভাবা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, রাজ্যের জেলার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, কালিম্পং বা কোচবিহার জেলায় হস্তশিল্পের গ্রাম তৈরির সম্ভবনার তালিকায় রাখা হয়েছে।
দফতরের অফিসারেরা জানান, কোন এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, হস্তশিল্পের প্রসার ও বিক্রির সঙ্গে পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্র হিসাবে গ্রামগুলি তৈরির কথা ভাবা হয়েছে। এক-দুই একর জমির মধ্যে এক ছাতার তলায় ছোট-ছোট ঘর তৈরি হবে, সেখানে শিল্পীরা কাজ করবেন। সামনে তৈরি জিনিসের বিপণন হবে। সঙ্গে চা কফি বা খাবারের জায়গা থাকবে। সেখানে আসার পরে পর্যটকেরা, হস্তশিল্পের কাজ হাতেকলমে দেখতে ও কিনতেও পারবেন। অনেকটা একই ঢঙে শিলিগুড়ির কাওয়াখালিতে বিশ্ববাংলা শিল্পীহাট তৈরি হয়েছে।
গত এক বছর ধরে সরকার গ্রামীণ পর্যটনে বিশেষ নজর দিয়েছে। গ্রামীণ পর্যটন গন্তব্যগুলিতে পরিকল্পিত বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং নিরাপদ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় জোর দিতে আলাদা প্রকল্প ভিত্তিক কাজ শুরু হয়েছে। বাড়তি জোর রয়েছে গ্রামীন হোম-স্টেগুলিতে। ‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্ক’-এর সচিব সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘পর্যটনের বিকাশে গ্রামীণ ক্ষেত্রকে বাড়তি অগ্রাধিকারদেওয়া হচ্ছে।’’