বোমা-গুলি-তিরে জখম তেরো
Chopra Unrest

চা বাগানের ‘দখল’ নিয়ে উত্তপ্ত চোপড়া

স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই চা বাগান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গন্ডগোল রয়েছে। বাগান শ্রমিকদের অভিযোগ, চা বাগানের জন্য একটি সংস্থাকে জমি দিয়েছিলেন তাদের বাবা-ঠাকুরদারা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
চোপড়া: শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৪২
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

চা বাগান দখল কেন্দ্র করে গন্ডগোলে তেতে উঠল উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ার পিয়ারেলাল চা বাগান। সেখানে দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে গুলি ও বোমাবাজির অভিযোগ করেছে। তিরও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। তাতে দুই পক্ষের অন্তত ১৩ জন জখম হন বলে দাবি। ঘটনার খবর পেয়ে চোপড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। গুরুতর জখম অবস্থায় তাদের প্রথমে চোপড়া ও পরে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরানো হয়। পরে, সেখানে অস্থায়ী ঝুপড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় শাসক পক্ষের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে বামেরা। অভিযোগ মানেনি তৃণমূল।

Advertisement

ইসলামপুর পুলিশ-জেলার পুলিশ সুপার যশপ্রীত সিংহ বলেন, ‘‘চা বাগানের জমি নিয়ে একটা গন্ডগোল হয়েছে। সেখানে ছররাতে কয়েক জন আহত হয়েছে বলে খবর মিলেছে। একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি, ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশি টহল চলছে।’’ পুলিশ সূত্রের দাবি, উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটি দেশি ‘শটগান’ জাতীয়।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই চা বাগান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গন্ডগোল রয়েছে। বাগান শ্রমিকদের অভিযোগ, চা বাগানের জন্য একটি সংস্থাকে জমি দিয়েছিলেন তাদের বাবা-ঠাকুরদারা। সেখানেই কাজ করতেন এলাকার শ্রমিকেরা। অথচ, পরে, চা বাগানটি অন্য কারও হাতে হস্তান্তর করে দেন মালিক পক্ষ। কাজ হারিয়ে বিপাকে পড়েন শ্রমিকেরা। অনেকেরই অভিযোগ, চা বাগানটি ‘প্লট’ করেও বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। তা রুখতে তাঁরা বাড়ি করেছিলেন সেখানে। এ দিন তাদের হটাতে হামলা চালায় এলাকার এক দল দুষ্কৃতী। তাদের লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়া হয় বলে দাবি শ্রমিকদের। ছররায় ১১ জন জখম হন। চা বাগানের শ্রমিক রমেশ হাঁসদা বলেন, ‘‘এই জমি আমাদের বাবা-ঠাকুরদারা দিয়েছিলেন। জমি হস্তান্তর হয়ে গেলে, কাজ হারাব। আমরা চাই, কোম্পানি বাগান না করলে, আমাদের জমি ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’’

অপর দিকে, নিজেকে চা বাগানের মালিক বলে দাবি করে চোপড়ার বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, ‘‘বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে ওরা জায়গা দখল করে রেখেছে। ছ’মাস আগে পেয়ারেলাল চা বাগানের মালিক পক্ষের কাছ থেকে আমরা বাগান নিয়েছি। এ দিন পাতা তোলার সময় লোকেদের উপরে হামলা চালায় ওরা। তিরের আঘাতে আমাদের দুজন আহত হয়েছেন। তাদের শিলিগুড়ির হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’’

সিপিএমের উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক আনোয়ারুল হক বলেন, ‘‘বাগান মালিক পক্ষের কাছ থেকে কম দামে জমি নিয়ে প্লট করে বেচছে কিছু জমি মাফিয়া। শ্রমিকেরা কাজ হারাচ্ছেন। শাসক দলের মদত ছাড়া, এ ধরনের ঘটনা সম্ভব নয়।’’

অভিযোগ উড়িয়ে চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান বলেন, ‘‘যাঁরা ওই এলাকায় বাগান দখল করেছেন, তাঁরা চা শ্রমিক নন। বহিরাগত। বাগানের দখল নিয়ে গন্ডগোল বলে শুনেছি। পুলিশ দেখছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। পুলিশকে বলেছি কঠোর হাতে ব্যবস্থা নিতে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement