—ফাইল চিত্র।
বেতাব ভ্যালি থেকে নেমে তড়িঘড়ি পহেলগামের হোটেলে ঢুকতে বলা হয়েছিল তাঁদের। স্থানীয় পর্যটন সংস্থার তরফে ছিল বার্তা— ‘‘জায়গাটা আর নিরাপদ নয়।’’ ভূস্বর্গে ঘুরতে যাওয়া জলপাইগুড়ির এক দল বাসিন্দা তখনও জানতেন না কী ঘটেছে, তাঁদের খুব কাছে। মঙ্গলবার বিকেলে হোটেলে ঢোকার পরে জঙ্গি হানার খবর পেয়ে চক্ষু চড়কগাছ তাঁদের। হোটেলে ফিরে শুনেছেন, যে পথ দিয়ে তাঁরা এসেছেন, তার পাশেই এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছে জঙ্গিরা। মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে পর্যটকদের রক্তাক্ত দেহ।
আতঙ্কে গলা দিয়ে জলও নামছে না। হোটেল থেকে এক পা-ও বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। পহেলগামের রিভার রাফটিং এলাকা থেকে ফোনে জলপাইগুড়ির শুভম দাস বললেন, ‘‘গা শিউরে উঠছে। প্রথমে শুনেছিলাম, ছোট কোনও ঘটনা ঘটেছে। যখন জঙ্গি হামলা ঘটছিল, তার পাশ দিয়েই আমরা ফিরছিলাম। হোটেল থেকে এখন বেরোতে দিচ্ছে না কাউকে। এখন শুধু প্রার্থনা করছি, ফেরার রাস্তা খুললে হয়।’’
জঙ্গি হামলার পরেই পহেলগাম থেকে কাশ্মীরে ফেরার রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে। পহেলগাম বাজার বিকেলের পর থেকে সুনসান। পহেলগাম বাজার থেকে কিছুটা দূরেই হামলা হয়েছে বলে আটকে পড়া পর্যটকরা জানালেন। রাস্তায় পুলিশ এবং সেনাবাহিনী ছাড়া, কাউকে দেখা যাচ্ছে না বলে দাবি জলপাইগুড়ির পর্যটকদের। শুভমের সঙ্গে আরও আঠারো জন পর্যটকের দল রয়েছে। জলপাইগুড়ি থেকে আরও কয়েক জন পর্যটক
পহেলগাম এবং লাগোয়া এলাকায় রয়েছেন। এ দিন জঙ্গি হামলার পরে শুভম সমাজমাধ্যমে সুস্থ থাকার কথা জানিয়েছেন।
এ দিন বিকেলে বেতাব ভ্যালি থেকে নামছিলেন শুভমরা। সেই সময়ে ফোনে যোগাযোগ করেন স্থানীয় পর্যটন সংস্থার এজেন্ট। শুভম বলেন, “আমাদের বলা হয়, ‘জায়গাটা নিরাপদ নয়, তাড়াতাড়ি নেমে আসুন’। তখন কিছু বুঝিনি। পরে বুঝতে পারি, আমরা যেখানে ছিলাম, তার আশেপাশেই জঙ্গিরা
হামলা চালাচ্ছিল।”
হোটেলে ফেরার পর থেকে পর্যটকদের আর বেরোতে দেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি কত ক্ষণে স্বাভাবিক হবে সে উৎকণ্ঠায় ভুগছেন পর্যটকেরা। পরিস্থিতির অবনতি হলে, বাড়ি ফেরার কী হবে রয়েছে সে চিন্তাও। পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত শুভম বলেন, “যতই আতঙ্কে থাকি, ভরসা রাখতে হবে। রাস্তা কবে খুলবে, এখন সে চিন্তা করছি।”