Haroa Murder

হাড়োয়ায় গুলিতে ঝাঁঝরা তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী, দলের অন্য গোষ্ঠীর দিকে আঙুল তুলছে পরিবার

পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন ওই নেতা। পরিবারের অভিযোগ, শাসকদলেরই অন্য গোষ্ঠী তাঁকে দলীয় পদ থেকে সরানোর জন্য খুন করেছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
হাড়োয়া শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৩ ১০:০৯
TMC leader was killed in Haroa on Saturday night.

—প্রতীকী চিত্র।

উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ায় ভোট পরবর্তী হিংসার জেরে খুন হলেন তৃণমূল নেতা। নিহতের নাম শেখ সাহেব আলি। রাতের অন্ধকারে এক দল দুষ্কৃতী তাঁকে গুলি করে খুন করেছেন বলে অভিযোগ। দলেরই অপর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে নিহতের পরিবার।

Advertisement

হাড়োয়ার খাসবালান্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের সামলা বাজার চত্বরে শনিবার রাতে কাজ সেরে বাইকে চড়ে ফিরছিলেন ওই তৃণমূল নেতা। তিনি এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থীও হয়েছিলেন। দলের টিকিটে জয়ী হন। অভিযোগ, রাতে তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায় পাঁচ থেকে সাত জন দুষ্কৃতী। তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে পর পর গুলি ছোড়া হয়। আট থেকে দশ রাউন্ড গুলি লাগে তাঁর গায়ে। বুক, পিঠ এমনকি মাথাতেও গুলি লেগেছে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সাহেব আলির।

পুলিশ সূত্রে খবর, নিহতের পরিবারের কাছে রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ খবর যায়। তাঁরা জানতে পারেন, বাজার এলাকায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে সাহেব আলির দেহ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। পুলিশের সামনে দেহ আটকে রেখে রাস্তার উপরেই বিক্ষোভ দেখান মৃতের পরিবারের সদস্যেরা। বিক্ষোভ চলে রাত আড়াইটে পর্যন্ত।

পরিবারের দাবি, তৃণমূলের অপর গোষ্ঠী রাজনৈতিক কারণে সাহেব আলিকে খুন করেছে। মৃতের কন্যা সিমরন পরভিন বলেন, ‘‘রাজনৈতিক কারণে আমার বাবাকে খুন করা হল। বাবাকে দলীয় পদ থেকে সরানোর জন্য এই কাজ করা হয়েছে। দলেরই অন্য গোষ্ঠী খুন করিয়েছে।’’

পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, জয়ী প্রার্থী হিসাবে সাহেব আলিকে প্রধান বা উপপ্রধানের যে পদ দেওয়ার কথা ছিল, তা-ও দেওয়া হয়নি। তাঁর উপর তৃণমূলের অন্য গোষ্ঠীর ক্ষোভ ছিল বলেই দাবি পরিবারের।

সাহেব আলির মৃত্যুতে তাঁর পরিবারে নেমে এসেছে বিষাদের ছায়া। তিন কন্যাকে রেখে গিয়েছেন তিনি। তাঁর স্ত্রী হালিমা বিবির হাহাকার, ‘‘কী ভাবে মেয়েদের মানুষ করব, জানি না।’’ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।

রাত আড়াইটের পর রাস্তা থেকে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। প্রথমে হাড়োয়া গ্রামীণ হাসপাতাল এবং পরে দেহ পাঠানো হয় বসিরহাট জেলা হাসপাতালে।

অন্য দিকে, তৃণমূল নেতার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। স্থানীয়েরা দুষ্কৃতীদের একটি বাইক জ্বালিয়ে দিয়েছেন। একটি অটোতেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। অটোটি নয়ানজুলিতে ফেলে দেয় উত্তেজিত জনতা। বিক্ষোভ সামলাতে রাতেই এলাকায় র‌্যাফ নামায় পুলিশ। তার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

বসিরহাটের এসপি জে বি থমাস জানিয়েছেন, এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।

আরও পড়ুন
Advertisement