‘সেরা বিদ্যালয়’-এর পুরস্কার
Raiganj

জরুরি সরঞ্জাম ছাড়াই সাফল্য, গর্বিত শিক্ষক

রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় জেলা পরিষদের সভাকক্ষে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে ওই স্কুলের অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে ওই পুরস্কার নিতে যাওয়ার কথা সাবিরের। তাঁর দাবি, স্কুলের নিজস্ব মাঠ নেই।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৪৭
কুনোইর হাই স্কুলের অনুর্ধ্ব ১৪ সুব্রত কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন দলের পড়ুয়ারা।

কুনোইর হাই স্কুলের অনুর্ধ্ব ১৪ সুব্রত কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন দলের পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।

স্কুলে খেলাধুলার তেমন পরিকাঠামো নেই বলে দাবি তাঁর। সরকারি বরাদ্দের অভাবে পড়ুয়াদের ক্রীড়া প্রশিক্ষণের বিভিন্ন সামগ্রীও কিনে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলেও তিনি দাবি করেছেন। তিনি হলেন উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ ব্লকের কুনোইর হাই স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক সাবির আলম। সব ঠিক থাকলে, পড়ুয়াদের খেলাধূলায় বিশেষ অবদানের জন্য আজ, মঙ্গলবার শিক্ষক দিবসে রাজ্য সরকারের তরফে এ বছরের ‘সেরা বিদ্যালয়’-এর পুরস্কার দেওয়া হবে ওই স্কুলকে।

Advertisement

রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় জেলা পরিষদের সভাকক্ষে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে ওই স্কুলের অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে ওই পুরস্কার নিতে যাওয়ার কথা সাবিরের। তাঁর দাবি, স্কুলের নিজস্ব মাঠ নেই। পড়ুয়াদের দু’কিলোমিটার দূরের একটি মাঠে নিয়ে গিয়ে নিয়মিত ফুটবল, ভলিবল, খোখো-সহ বিভিন্ন অ্যাথলেটিক্সের প্রশিক্ষণ দিতে হয়। স্কুলে সরকারি বরাদ্দ না থাকায় ছেলেমেয়েদের খেলাধুলা ও ক্রীড়া চর্চার সামগ্রী কিনে দেওয়া যাচ্ছে না। জুতোর অভাবে ছাত্রছাত্রীদের ফুটবল, ভলিবল, খোখো-সহ খেলাধুলার প্রশিক্ষণ নিতে সমস্যা হয়। সাবির বলেন, “তবে শিক্ষক দিবসে আমার পড়ুয়াদের ক্রীড়াক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য আমার স্কুলের ‘সেরা বিদ্যালয়’-এর পুরস্কার হাতে নেব। শিক্ষক দিবসের দিন এক জন শিক্ষকের এর থেকে বড় সম্মান ও প্রাপ্তি কী আর থাকতে পারে? আমার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে স্কুলের পড়ুয়ারা সফল হয়েছে, ভেবে গর্বিত বোধ করছি।”

সাবিরের বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে। তিনি গত সাড়ে তিন বছর ধরে ওই স্কুলে ক্রীড়া শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। ইতিমধ্যেই সাবিরের উদ্যোগে স্কুলের ছাত্র ও ছাত্রীদের পৃথক অনূর্ধ্ব ১৪ ও অনূর্ধ্ব ১৭ ফুটবল, ভলিবল ও খোখো’র দল গঠিত হয়েছে। এ ছাড়া, স্কুলের পড়ুয়াদের তিনি দৌড়, হাই জাম্প, লং জাম্প, জ্যাভলিন থ্রো-সহ বিভিন্ন অ্যাথলেটিক্সের প্রশিক্ষণও দেন। সাবিরের প্রশিক্ষণেই গত বছর, রাজ্য স্তরের অনূর্ধ্ব ১৪ সুব্রত কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতায় ওই স্কুলের পড়ুয়াদের দল চ্যাম্পিয়ন হয়। সে সাফল্যের কারণেই ওই স্কুলকে এ বছর রাজ্য সরকার ‘সেরা বিদ্যালয়’-এর পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

এর আগে ২০১৯ সালে সাবিরের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ওই স্কুলের পড়ুয়ারা রাজ্য স্তরের ওই প্রতিযোগিতায় রানার্স হয়। এ বছর ওই প্রতিযোগিতায় অবশ্য স্কুলের পড়ুয়ারা সেমিফাইনালে হেরে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যায়। তাতে অবশ্য সাবিরের আক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, “স্কুলে খেলাধূলার পরিকাঠামো ছাড়াই স্কুলের পড়ুয়ারা এত ভাল খেলছে। গরিব ঘরের পড়ুয়ারা জুতোর অভাবে খালি পায়ে ফুটবল-সহ বিভিন্ন খেলার প্রশিক্ষণ নেয়। ওদের খেলাধূলার পোশাকও নেই।” জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক মুরারিমোহন মণ্ডল ওই স্কুলের খেলাধুলার পরিকাঠামো খোঁজ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

আরও পড়ুন
Advertisement