পদযাত্রায় বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি। ছবি: স্বরূপ সরকার।
দোকানের মালিকানার দাবিতে বন্ধ ডেকে আন্দোলনে নামলেন শিলিগুড়ি বিধান মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। বুধবার ২৪ ঘণ্টা বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সে মতো এ দিন বিধান মার্কেট, ক্ষুদিরাম পল্লি, আনাজ বাজার, হংকং মার্কেট— সবই বন্ধ ছিল। রবিবার ছুটির দিন এবং মঙ্গলবার, ১৫ অগস্ট দোকান বন্ধ থাকার পরে, এ দিন আবারও বাজার বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েন বাসিন্দারা।
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) বিরুদ্ধে দোকানের মালিকানা দিতে টালবাহানার অভিযোগ তুলে এ দিন বিধান মার্কেট থেকে মিছিল বার করে শহর ঘোরেন ব্যবসায়ী সমিতির লোকজন। এসজেডিএ চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তেলেন বিধান মাকেট ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তারা। ‘শিলিগুড়ি বৃহত্তর খুচরো ব্যবসায়ী সমিতি’র সম্পাদক পরিমল মিত্র শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্যও। সরকার যেখানে বন্ধের বিরোধী, সেখানে তিনি বন্ধ সমর্থন করে সংগঠনের লোকজনকে শামিল করায় প্রশ্ন উঠেছে। তিনি বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীদের এই সমস্যা এসজেডিএ-কে দেখতে হবে। বোর্ডের সভাতেও বলেছি। এই বন্ধ সমর্থন করেছি। আমাদের লোকেরা শামিলও হয়েছেন।’’ এসজেডিএ চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ ভুল বোঝাচ্ছেন। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলব। কোনও জমি মন্ত্রিসভার অনুমোদন ছাড়া, দেওয়া যাবে না। উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতর থেকে বিধান মার্কেটের জায়গা এসজেডিএ-কে দেওয়া হয়েছিল।’’
বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তাদের অভিযোগ, একই জমিতে ব্যবসা অধিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে পাঁচ রকমের আইন চলছে। কেউ ‘অ্যালটি’, কারও ১১ মাসের চুক্তি, আবার কারও পাঁচ বা ন’বছরের। সমিতির সম্পাদক বাপি সাহা বলেন, ‘‘আমাদের মালিকানা দিতে হবে। গত ৬১ বছরে উন্নয়ন হয়নি। আর করতে হবে না!’’ সমিতির সহ-সম্পাদক রাজু দে বলেন, ‘‘মালিকানার দাবিতে আমরা পথে নেমেছি। আন্দোলন করেই আমাদের দাবি বুঝে নিতে হবে। এতে কাজ না হলে, বৃহত্তর আন্দোলন হবে।’’
সমিতির দাবি, এই সমস্যা নিয়ে ৭৫ থেকে ৮০ বার এসজেডিএ-কে চিঠি দেওয়া হলেও উত্তর মেলেনি। অভিযোগ, ১২ বছর পরে, এ বার আলোচনায় ডাকা হলে ব্যবসায়ীরা তাঁদের দাবির কথা জানান এবং চেয়ারম্যান ১৫ জুন আবার তাঁদের ডাকবেন বলা হলেও দু’মাস পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। সম্পাদকের অভিযোগ, ‘‘চেয়ারম্যান বলছেন, রাজ্য সরকার জানে। তা হলে উনি ওই চেয়ারে বসে আছেন কেন? ছেড়ে দিন। রাজ্য সরকারের থেকেই বুঝে নেব!’’
বন্্ধে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হচ্ছে না? এ প্রশ্নে সমিতির দাবি, ব্যবসায়ীরা এই মুহূর্তে তাঁদের ক্ষতির কথা ভাবছেন না বলেই দাবি আদায়ে সবাই শামিল হয়েছেন। সমিতির বক্তব্য, বন্ধ ডেকে তাঁরা মানুষকে সমস্যায় ফেলতে চান না এবং এসজেডিএ দাবি মেনে নিলেই আন্দোলন বন্ধ হয়ে যাবে।