Ananta Maharaj

রাজ্যভাগ-চর্চা এড়াতেই কি প্রচারে দেরিতে অনন্ত, জল্পনা

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য বিজেপির নেতৃত্ব স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন, তারা রাজ্যভাগের বিরোধী। কোনও ভাবেই রাজ্য ভাগ হোক, এটা তারা চান না।

Advertisement
নমিতেশ ঘোষ , অনির্বাণ রায়
বহরমপুর ও কোচবিহার, ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:১২
অনন্ত মহারাজ।

অনন্ত মহারাজ। —ফাইল চিত্র।

উপনির্বাচনের মুখে রাজ্য বিজেপির নেতা সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীরা কার্যত চষে বেড়াচ্ছেন ধূপগুড়ির এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত। কিন্তু রাজ্যবংশী-প্রধান ধূপগুড়িতে প্রচারে সদ্য রাজ্যসভায় যাওয়া নগেন্দ্র রায় ওরফে অনন্ত মহারাজের দেখা
মেলেনি এত দিন। কেন? বিভিন্ন মহলে উঠেছে প্রশ্ন। তবে শুক্রবার গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান অনন্ত জানান, আজ, শনিবার বিজেপি প্রার্থীর হয়ে প্রচার করবেন তিনি। অনন্ত বলেন, ‘‘বিজেপির তরফে আমাকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। আমি ধূপগুড়ি গিয়ে বিজেপি প্রার্থীর হয়ে প্রচার করব।’’ তা হলে কি এত দিন প্রচারে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি? সরাসরি কেউ কিছু না বললেও রাজনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা, ভোট হারানোর আশঙ্কাতেই ‘রাজ্যভাগের দাবিতে সরব’ অনন্তকে এত দিন আড়ালে রেখেছিল বিজেপি। শেষ বেলায় রাজবংশী ভোট পেতে ময়দানে নামানো হচ্ছে তাঁকে।

Advertisement

বিজেপি সূত্রের অবশ্য দাবি, প্রচার তালিকায় শুরু থেকেই অনন্তের নাম ছিল। কিন্তু ভয় ছিল, নির্বাচনে
প্রচারে তিনি রাজ্যভাগের দাবি বা প্রসঙ্গ তুললে তা দলের বিপক্ষে যেতে পারে। সে কারণেই প্রচারের শেষ মুহূর্তে অনন্তকে নামানো হচ্ছে, যাতে তাঁকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে অনুগামীদের কাছে সহজেই বার্তা পৌঁছনো যায়, আবার রাজ্যভাগের দাবি নিয়ে আলোচনার বেশি
সুযোগ না থাকে। বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি রথীন্দ্রনাথ বসু বলেন, ‘‘আমাদের দল স্পষ্ট জানিয়েছে, রাজ্যভাগ আমরা চাই না। আমি নিজে উত্তরবঙ্গের
বাসিন্দা। কিন্তু কোনও ভাবেই আলাদা রাজ্য চাই না। অনন্ত মহারাজ তাঁর নিজস্ব বক্তব্য বলতেই পারেন। তা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে দলের প্রচারে কোনও ক্ষতি হবে না। আমরা জয়ী হব।’’

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য বিজেপির নেতৃত্ব স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন, তারা রাজ্যভাগের বিরোধী। কোনও ভাবেই রাজ্য ভাগ হোক, এটা তারা চান না। ধূপগুড়িতে দিন কয়েক আগে প্রচারে এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দাবি করেন, বাংলা ভাগ নিয়ে অনন্ত মহারাজ যা বলেছেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপির ঘোষিত নীতি হল শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় যে অবস্থায় বাংলাকে রেখে গিয়েছেন সে ভাবেই আমরা বাংলাকে দেখতে চাই।’’

যদিও বিজেপিরই একটি অংশের মুখে আবার রাজ্য ভাগের দাবি শোনা গিয়েছে একাধিক বার। এই
অবস্থায় অনন্তকে প্রচারে নামানো হবে কি না তা নিয়ে বিজেপির দু’পক্ষের মধ্যে দড়ি টানাটানি চলছিল। এক পক্ষের দাবি, রাজ্যভাগের দাবিদার অনন্ত প্রচারে নামলে ভোটারদের একটি অংশে ক্ষোভ বাড়বে। অপর পক্ষের দাবি, অনন্তের প্রভাব রয়েছে রাজবংশী জনজাতির উপরে। তাঁর প্রচারে ওই ভোট বিজেপির
ঝুলিতে পড়বে।

এই প্রসঙ্গে শিলিগুড়ির মেয়র তথা তৃণমূল নেতা গৌতম দেব বলেছেন, বিজেপি ভোটে জেতার জন্য বিভেদের রাজনীতি করছে। তবে মনে রাখতে হবে এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা। এখানে যত বিচ্ছিন্নতাবাদের কথা বলা হবে ততই মানুষ তৃণমূলের পাশে দাঁড়াবে।"

আরও পড়ুন
Advertisement