Cooch Behar Murder

খুনি বা তার সঙ্গী মৃতার ‘পরিচিত’, ধারণা পুলিশের

পুলিশ সূত্রের খবর, গত শুক্রবার সোমা সরকার রাত ১টা নাগাদ কোচবিহারের বাসিন্দা এক পরিচিতের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। শনিবার সকাল ঘুম থেকে ওঠার পরে মোবাইলে সামজিক মাধ্যমেও কিছুটা সময় কাটিয়েছিলেন।

Advertisement
কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৪১
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

বিছানায় রাখা বড় মাপের পুতুল মুখে চাপা দিয়ে গলায় রশি দিয়ে শ্বাস বন্ধ করে অরবিন্দপল্লির বাসিন্দা সোমা সরকারকে খুন করা হয়েছে বলে তদন্তকারীদের অনুমান। গত শনিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে মহিলার দেহের ময়নাতদন্ত হয়। চিকিৎসকদের অনুমান, বালিশ বা সেই জাতীয় কিছু দিয়ে মহিলার নাকে-মুখে চেপে ধরে গলা টিপে মারা হয়েছে। যদিও মৃতার ঘরের কোণে একটি রশি পায় পুলিশ। তবে বালিশ জাতীয় কিছু প্রথমে পাওয়া যায়নি। পরে বিছানার কোণে এক বড় পুতুল পড়ে থাকতে দেখা যায়। তদন্তকারীদের অনুমান, সেটিই সম্ভবত খুনের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল। এডিসিপি শুভেন্দ্র কুমার জানান, বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, গত শুক্রবার সোমা সরকার রাত ১টা নাগাদ কোচবিহারের বাসিন্দা এক পরিচিতের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। শনিবার সকাল ঘুম থেকে ওঠার পরে মোবাইলে সামজিক মাধ্যমেও কিছুটা সময় কাটিয়েছিলেন। সকাল ৭টা অবধি তিনি মোবাইলে ‘অনলাইন’ ছিলেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। তার পরে ফ্ল্যাটের দরজায় ‘পরিচিত’ কেউ আসতেই তিনি মোবাইল বন্ধ করেন। সম্ভবত, আততায়ী বা আততায়ীরা সেই সময় ঘরে ঢোকে। খুনের পর আলমারি খুলে সেখান থেকে নগদ লক্ষাধিক টাকা এবং সোনার গয়না নিয়ে পালায় বলে দাবি। মহিলার গলায় সোনার চেনও নিয়ে গিয়েছে আততায়ীরা। সব কিছুই ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে হয়েছে বলে ধারণা পুলিশের।

পুজোর আগে বুটিকের ব্যবসার মালপত্র কেনার জন্য তিনি বাড়িতে নগদ টাকা রেখেছিলেন। তেমনিই, ক’দিন আগে ব্যাঙ্কে তাঁর দু’লক্ষ টাকার একটি রেকারিং ডিপোজ়িটের মেয়াদ শেষ হয়েছিল। সেই টাকাও বাড়িতেই ছিল। কয়েক বছরে বুটিকের ব্যবসা ভালই চলছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। তদন্তকারী ও ফরেনসিক অফিসারদের অনুমান, খুনিরা নগদ টাকার বিষযে কোনও আঁচ আগাম পেয়ে থাকতে পারে। সাত সকালে কোনও অছিলায় ঘরে ঢুকে টাকা, গয়না নিয়ে পালায়। আবাসনে সিসি ক্যামেরা নেই, তাও আততায়ী যে জানে, তা স্পষ্ট।

সারা বছর বিভিন্ন মেলায় কাপড়ের স্টল দিতেন সোমা সরকার। সেই সূত্রে অনেকের সঙ্গেই পরিচয় হয়। শুক্রবার রাতে মহিলা কোচবিহারে এক পরিচিতকে তিনি জানান, ফ্ল্যাটের নীচের থেকে ওষুধের দোকানের মালিক তাঁর এক বন্ধুকে নিয়ে শাড়ি দেখতে এসেছিলেন। ৪২০০ টাকার শাড়ি ৩২০০ টাকায় কেনেন। কিন্তু অনলাইনে পাঠাতে না পেরে রাতে টাকা দেননি ওই ক্রেতা। তবে এই বিষয়টি তাঁর ভাল লাগেনি বলেও ফোনে পরিচিতকে জানিয়েছিলেন সোমাদেবী।

আপাতত ওই দোকানের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তিনি মহিলাকে ফ্ল্যাটের গেট বন্ধ করতে দেখেছেন বলে দাবি করেন। পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, সোমাদেবী অপরিচিত কেউ এলে ফ্ল্যাটের গেট খুলতেন না। তাই ‘পরিচিতই’ কেউ ফ্ল্যাটে ঢুকেছিল, তা মোটামুটি নিশ্চিত। মহিলার গত কয়েকদিনের মোবাইলের কল রেকর্ড খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

আরও পড়ুন
Advertisement