Malda Murder

শুধুই কি পুরনো আক্রোশ না আরও কিছু? মালদহে নাবালিকা খুনে ধৃতের বয়ানে সন্দিহান পুলিশ

প্রায় দু’দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর বুধবার গভীর রাতে মালদহ শহরের আমবাজার থেকে নাবালিকার মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার হয়। পরে কাটা মাথাও উদ্ধার হয় দেহ থেকে প্রায় ৫০ মিটার দূরে একটি পরিত্যক্ত গুদামঘরের ছাদ থেকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ইংরেজবাজার শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:২৯

—প্রতীকী ছবি।

মালদহে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী খুনের ঘটনায় ধৃত যুবকের বয়ান পুরোপুরি মানতে পারছেন না তদন্তকারীরা। নাবালিকাকে খুনের নেপথ্যে যে শুধু পারিবারিক আক্রোশ রয়েছে, তা-ও মানতে নারাজ তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করার কথা ভাবছেন জেলা পুলিশ কর্তারা।

Advertisement

প্রায় দু’দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর বুধবার গভীর রাতে মালদহ শহরের আমবাজার থেকে নাবালিকার মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার হয়। পরে কাটা মাথাও উদ্ধার হয় দেহ থেকে প্রায় ৫০ মিটার দূরে একটি পরিত্যক্ত গুদামঘরের ছাদ থেকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহ ও মুণ্ডটি ময়নাতদন্তে পাঠায়। পরে তদন্তে নেমে এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অভিযুক্ত যুবক শ্রীকান্ত কেশরীকে আটক করে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওই যুবক নাবালিকাকে বাইকে করে কোথাও নিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তাঁর বয়ানে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এর পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে নেমে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ধৃত যুবক নাবালিকারই দূর সম্পর্কের আত্মীয়। জেরায় তিনি স্বীকার করেছেন, বদলা নিতেই নাবালিকাকে অপহরণ করে খুন করেছেন। নাবালিকার বাবা তাঁকে বিভিন্ন সময়ে মারধর করতেন। তা নিয়ে অনেক দিন ধরেই রাগ ছিল। বদলা নিতে নাবালিকার বাবাকে ভয় দেখানোর ছক কষেন তিনি। চেয়েছিলেন, মেয়েটির গলায় চাকু ধরে সেই ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে। সেই মতো তাকে বাড়ি থেকে নিয়েও গিয়েছিলেন ছবি তোলার জন্য। কিন্তু গলায় চাকু ধরে থাকার সময় নাবালিকা ছটপট করতে থাকে। তাতে তার গলা কেটে যায়। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে নাবালিকা নৃশংস ভাবে খুন করেছেন তিনি।

তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, নাবালিকাকে খুনের ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত থাকতে পারেন। কারণ, নাবালিকাকে অপহরণ করে খুন করে দু’দিন ধরে দেহ লোপাট করে রাখার জন্য যথেষ্ট পরিকল্পনার প্রয়োজন। যা ধৃতের একার পক্ষে কতটা সম্ভব, তা নিয়ে সন্দিহান তদন্তকারীদের কেউ কেউ। এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘নিখুঁত পরিকল্পনা ছাড়া ও কাজ করা যায়। মাদকাসক্ত হয়ে তো আর ওই কাজ করা যায় না।’’ নাবালিকা খুনের পিছনে শুধু পারিবারিক আক্রোশ না কি আরও অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে। মালদহ জেলার পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত চলছে। তাই এখনই সব বলা সম্ভব নয়।’’

নাবালিকা একটি বেসরকারি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া। তার বাবা মনোজ কেশরী পেশায় ব্যবসায়ী। তাঁরা মালদহের বালুচর এলাকার বাসিন্দা। পরিবার সূত্রে খবর, গত সোমবার বাড়ির সামনে থেকে উধাও হয়ে যায় নাবালিকা। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তার হদিস না মেলায় শেষে ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার প্রায় দু’দিন পর নাবালিকার দেহ উদ্ধার হল। অপহরণের করে খুনে ঘটনায় বুধবার রাত থেকেই উত্তপ্ত গোটা এলাকা। শ্রীকান্ত গ্রেফতার হওয়ার পরেই তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দিয়েছেন স্থানীয়েরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন
Advertisement