R G Kar Hospital Incident

স্লোগানের বিরুদ্ধে পুলিশের প্রতিবাদ সামািজক মাধ্যমে

আর জি কর-কাণ্ডের পরে প্রকাশ্যে তো বটেই সমাজ মাধ্যমেও পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে একাধিক রাজনৈতিক দল এবং অরাজনৈতিক সংগঠন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৪ ০৯:৫৭
আর জি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ কোচবিহারের একটি কলেজের ছাত্রছাত্রীদের। নিজস্ব চিত্র

আর জি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ কোচবিহারের একটি কলেজের ছাত্রছাত্রীদের। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP

এ বার সামাজিক মাধ্যমে ‘প্রতিবাদে’ নামল পুলিশও। কেউ কলকাতার ট্র্যাফিক সার্জেন্টের জখম হওয়ার ছবি, কেউ আক্রান্ত মহিলা পুলিশকর্মীর ছবি ফেসবুকে ‘পোস্ট’ করলেন। কেউ লিখলেন, ‘পুলিশের মেয়ের চিন্তা ছাড়ো/সে লড়াই করেই হচ্ছে বড়ো’। কেউ লিখলেন, ‘পুলিশ হওয়ার জন্য যাঁরা আমাকে পছন্দ করছেন, তাঁরা বন্ধুতালিকা থেকে চলে যেতে পারেন।’ পুলিশকর্মীদের এমন ‘পোস্ট’ ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। পুলিশ কি সহমর্মিতা চাইছে, না কি আর জি কর-কাণ্ডের পরে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এমন পন্থা নিয়েছে, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

Advertisement

সমাজ মাধ্যমে এই ‘প্রতিবাদ’ ঘিরে দু’রকম মতামত উঠে আসছে পুলিশের মধ্যে থেকেই। একাংশের দাবি, এক জন জখম পুলিশকর্মীর ছবি দেখে অনেকেই আনন্দ পাচ্ছেন। পুলিশকর্মীদের মেয়েদের নিশানা করে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধেই ওই প্ৰতিবাদ। গঠনমূলক সমালোচনায় পুলিশের কোনও আপত্তি নেই। তারা বলছে, পুলিশ সরকারের নির্দেশে কাজ করবে, এটাই স্বাভাবিক। তা বলে তাদের পরিবারকে নিশানা করে সরাসরি ‘হুমকি’ দেওয়া যায় না। সমাজ মাধ্যমে
তা নিয়েই আপত্তি জানাচ্ছেন তাঁরা। আবার একটি অংশ এ-ও বলছে,
এই ‘পরিস্থিতি’র দায় পুলিশেরই। তারা নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে না বলেই মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়েছে।

অভিযোগ, আর জি কর-কাণ্ডের পরে প্রকাশ্যে তো বটেই সমাজ মাধ্যমেও পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে একাধিক রাজনৈতিক দল এবং অরাজনৈতিক সংগঠন। যার প্রতিবাদে, গত দু’দিনে কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলার একাধিক থানার আধিকারিকদের পাশাপাশি পুলিশকর্মীরা সমাজ মাধ্যমে সরব হতে শুরু করেছেন। একাধিক পুলিশকর্মী সমাজ মাধ্যমে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন। সাধারণ মানুষকেও বার্তা দিয়েছেন, পুলিশের কাজে অসন্তুষ্ট হলে, সমাজ মাধ্যমে তাদের সঙ্গ ত্যাগ করার। এ প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলার একটি থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা সংবিধানিক নিয়ম মেনে কাজ করছি এবং রাজধর্ম পালন করছি। আমাদের ব্যক্তিগত আক্রমণ করলে, কিছু যায় আসে না। কিন্তু পরিবার নিয়ে কথা বললে মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই, এই ধরনের অনৈতিক আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত থাকা মানুষের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।’’

এই বিষয়টি নিয়ে পুলিশের পক্ষেই দাঁড়িয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ সরকারের নির্দেশে কাজ করবে। সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তার ফলে যে ভাবে পুলিশের মেয়ের নাম করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে সমাজ মাধ্যমে, তা যথেষ্ট উদ্বেগের। সে কারণেই হয়তো পুলিশকর্মীরা আবেগ প্রকাশ করেছেন। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।’’ বিজেপির কোচবিহার জেলার সভাপতি সুকুমার রায়ের মন্তব্য, ‘‘পুলিশ শাসক দলের নির্দেশে প্রতিনিয়ত অনৈতিক কাজ করেছে। ওরা এখন দলদাসে পরিণত হয়েছে। পুলিশের নিরপেক্ষ হয়ে সব ক্ষেত্রে কাজ করা উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement