Siliguri Water Crisis

শিলিগুড়ির জলসঙ্কট কাটাতে নড়েচড়ে বসল নবান্ন, তিন প্রান্ত থেকে পাঠানো হচ্ছে পানীয় জলের পাউচ

আপাতত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য একটি এমটিউই গাড়ি শিলিগুড়ি পাঠানো হয়েছে। সেই গাড়িতে থাকা প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে শিলিগুড়ির স্থানীয় পুকুরের জল পরিস্রুত করে পানের যোগ্য করে তোলা হচ্ছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৪ ১৭:৩১
PHE Initiatives to solve water crisis in Siliguri

শিলিগুড়ি পুর এলাকার বাসিন্দাদের পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে এমটিউই গাড়ি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের তরফে। —নিজস্ব চিত্র।

শিলিগুড়ির জলসঙ্কট কাটাতে নড়েচড়ে বসল নবান্ন। শিলিগুড়ি পুর এলাকার বাসিন্দাদের পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে মোবাইল ট্রিটমেন্ট ইউনিট (এমটিউই)-এর গাড়ি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের তরফে। যত দিন না শিলিগুড়ি পুর এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ স্বাভাবিক হচ্ছে, তত দিন এই গাড়িগুলি মোতায়েন থাকবে।

Advertisement

পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য একটি এমটিউই গাড়িকে শিলিগুড়ি পাঠানো হয়েছে। সেই গাড়িতে থাকা প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে শিলিগুড়ি স্থানীয় পুকুরের জল পরিস্রুত করে পানের যোগ্য করে তোলা হচ্ছে। সেখানে পরিস্রুত জল পরে পাউচের মাধ্যমে বিলি করা শুরু হয়েছে শিলিগুড়ি শহরে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের নর্দার্ন জোনে থাকা আরও দু’টি গাড়িকে শিলিগুড়ি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। মালদহ ও কোচবিহার থেকে ওই এমটিইউ গাড়িগুলি শিলিগুড়ি পুরসভায় পাঠানো হচ্ছে। মোট তিনটি এমটিইউ গাড়ি শিলিগুড়িবাসীর জলের চাহিদা মেটাবে বলেই দাবি জনস্বাস্থ্য কারিগারি দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিকের। একটি এমটিইউ গাড়ি থেকে প্রতি দিন দেড় লাখ পাউচ জল উৎপাদন করা সম্ভব বলে জানিয়েছে দফতরের একটি সূত্র। অর্থাৎ তিনটি গাড়ি থেকে প্রতি দিন সাড়ে চার লক্ষ জলের পাউচ উৎপাদন করে বিলি করা হবে। তাতে শিলিগুড়ি পুরসভা এলাকার বাসিন্দাদের পানীয় জলের অনেকটাই মিটবে বলেই মনে করছে নবান্ন।

উল্লেখ্য, বুধবার শিলিগুড়িতে মেয়র গৌতম দেব ঘোষণা করেছিলেন, পুরসভা থেকে যে জল সরবরাহ করা হয়, তা পান করা যাবে না। আগামী কয়েক দিন এই জল পানে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। মেয়র জানিয়েছিলেন, পরবর্তী ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত পুরসভা সরবরাহ করা পানীয় জল কেউ পান করবেন না। জলের মান খারাপ ধরা পড়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় পুরসভার তরফে। বিকল্প হিসাবে জলের পাউচ বিলি করা হচ্ছিল শহর জুড়ে। ২৬টি পানীয় জলের ট্যাঙ্ক বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাঠানো হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছিলেন মেয়র। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। বুধবার থেকে শিলিগুড়িতে পানীয় জলের হাহাকার শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সেই ইস্যুকে সামনে রেখেই পথে নামে বামেরা। সিপিএম এবং এসইউসিআইয়ের তরফে শিলিগুড়ি পুরসভায় বিক্ষোভ দেখানো হয়। ছিলেন প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্যও।

শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘অদক্ষ কেউ যদি মেয়রের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে বসেন, তা হলে কী হতে পারে দেখা যাচ্ছে। ২০ দিন ধরে শিলিগুড়ির মানুষ দূষিত পানীয় জল খেলেন। হাসপাতালে ভর্তি হলেন। মেয়র তা জানতেনই না। যখন তিনি সব জেনে জল না খাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছেন, তার আগে উপযুক্ত ব্যবস্থা তিনি নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই চারদিকে এখন জলের হাহাকার। কালোবাজারি শুরু হয়েছে। মেয়র বুদ্ধি হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে একটি ওয়ার্ডের মানুষ সারা দিন জল পাবেন। বাকি ৪৬টি ওয়ার্ডের মানুষ দিনে এক বার জল পাবেন। এর থেকে প্রমাণিত হয় মেয়র অদক্ষ, অথবা মেয়র পারিষদ এবং আধিকারিকেরা তাঁকে গদি থেকে সরানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন।’’ তবে শিলিগুড়িতে আগামী দিনেও পানীয় জলের পাউচ বিলি তাঁরা চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায়। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দফতর শিলিগুড়ি পুরসভা এলাকার মানুষের পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে কাজ শুরু করে দিয়েছে। শিলিগুড়ি পুরসভা যত দিন চাইবে, আমরা তত দিন এই পরিষেবা সেখানকার মানুষের জন্য দিতে থাকব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement