স্নেহাশিস চক্রবর্তী। — ফাইল চিত্র।
প্রায় ১৬ মাস আগে, চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের দুই হাজার টাকা করে বেতন বৃদ্ধি কার্যকর করে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম। সে টাকা হাতেও পাচ্ছিলেন কর্মীরা। মাস দুয়েক আগে, বছরে তিন শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধিও কার্যকর করা হয়। সেই খাতে ৩০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে পরিবহণ দফতর। এই অবস্থায় সরকারি নতুন নির্দেশে বৃদ্ধি হওয়া সব বেতন বাতিল করা হয়। তা নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন নিগমের কর্মীরা। পরিস্থিতি সামলাতে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর সঙ্গে বৈঠক করলেন নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়।
কলকাতায় পরিবহণ ভবনে মঙ্গলবার যান পার্থ। তিনি পরিবহণ দফতরের সচিব সৌমিত্র মোহনের সঙ্গেও কথা বলেন। বৈঠক শেষে পার্থ বলেন, ‘‘ওই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে পরিবহণ মন্ত্রী আমাকে জানিয়েছেন। তিনি সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের সঙ্গেই কথা বলবেন। আশা করি, এই সমস্যার সমাধানে কোনও রাস্তা বার হবে।’’
নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমে চুক্তিভিত্তিক প্রায় দুই হাজার কর্মী রয়েছেন। কর্মীরা জানান, ১৬ মাস আগে দুই হাজার টাকা বেতন বৃদ্ধিতে তাঁরা অনেকটাই খুশি ছিলেন। কারণ, মাসের শেষে তাঁরা যে টাকা হাতে পান, তা দিয়ে সংসার চালানো কষ্টকর। সে সঙ্গে পুজোর আগে বছরে তিন শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধির ঘোষণায় আশায় বুক বেঁধেছিলেন তাঁরা। কিন্তু এখন যে ভাবে টাকা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাতে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে সবাইকে।
এক কর্মী বলেন, ‘‘১৬ মাস ধরে বাড়তি দুই হাজার টাকা করে বেতন বেশি পেয়েছি। স্বাভাবিক ভাবেই খরচও বেড়েছে। এখন আবার দুই হাজার টাকা কমিয়ে দেওয়ায় সংসার চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’ এই অবস্থায় ডান-বাম সব সংগঠনের পক্ষ থেকেই বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। দিন কয়েক আগে, কোচবিহারে নিগমের প্রধান অফিসের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন। কোচবিহার থেকে শুরু করে মালদহ, উত্তরবঙ্গের সব জেলা থেকেই নিগমের কর্মীরা ওই আন্দোলনে যোগ দেন।
তৃণমূলের উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক দীপেশ দাশ বলেন, ‘‘আমাদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। আমরা প্রতিটি জেলায় দলের জেলা সভাপতিদের চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছি। নানা মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও পরিবহণমন্ত্রীকেও বিষয়টি জানানোর চেষ্টা চলছে। এ ভাবেই আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’