—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
উত্তর দিনাজপুর জেলায় ইটাহার ও গোয়ালপোখর ২ ব্লক ছাড়া সাতটি ব্লক মিলিয়ে ২২৭ কিলোমিটার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। বাংলাদেশে অশান্ত পরিস্থিতির জেরে জেলার বিভিন্ন এলাকার সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা বাড়ছে। ভয় রয়েছে জঙ্গি অনুপ্রবেশ নিয়েও। আশঙ্কা বৃদ্ধির কারণও অমূলক নয়। কারণ, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে জেলার বিভিন্ন এলাকার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের একাধিক নাগরিক বেআইনি ভাবে এ দেশে ঢুকেছেন। জেলার কিছু এলাকার সীমান্ত এখনও উন্মুক্ত। বাংলাদেশে এখনও একটি সম্প্রদায়ের উপরে অত্যাচার কমার কোনও প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না। সে দেশের অনেকে বাধ্য হয়ে প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পার হয়ে এ দেশে ঢোকার চেষ্টা করছেন। এটা কোনও ভাবেই লঘু করে দেখা ঠিক নয়।
কারণ যতটুকু শুনেছি, বাংলাদেশে গোলমালের জেরে কয়েক মাস আগে সেখানকার জেল থেকে বহু জঙ্গি পালিয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেরই এখনও হদিশ মেলেনি। জেলার সীমান্তে নজরদারির শিথিলতা ও উন্মুক্ত সীমান্তের জেরে বাংলাদেশের জঙ্গিরা যাতে এ দেশে ঢুকে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে না পারে, সে দিকে বিএসএফ, পুলিশ ও প্রশাসনের নজর বাড়ানো উচিত। গত বছরের ১০ ডিসেম্বর চোপড়া থানার লক্ষ্মীপুরের ফতেপুর সীমান্ত থেকে অনুপ্রবেশের অভিযোগে এক বাংলাদেশি নাবালিকাকে আটক করা হয়। তার পরের দিনই কালিয়াগঞ্জের চাঁদগাঁও ও পুরগ্রাম সীমান্তে অনুপ্রবেশের অভিযোগে দুই বাংলাদেশি বৃদ্ধা বিএসএফের হাতে ধরা পড়েন। বাংলাদেশে অশান্ত পরিস্থিতির জেরে গত বছরের ডিসেম্বরের গোড়ায় হেমতাবাদের শিমূলডাঙি, মকরহাট ও সন্তরা সীমান্তে দুই দেশের বাসিন্দাদের ‘মিলনমেলা’ও বাতিল করে বিএসএফ ও প্রশাসন।
মনে রাখতে হবে, আমাদের জেলার কালিয়াগঞ্জের রাধিকাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সীমান্তে টাঙন নদীর সেতুর নীচের প্রায় একশো মিটার জলপথে কাঁটাতার নেই। তাই, বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ওই দেশের কেউ যাতে সেই পথে এ দেশে ঢুকতে করতে না পারে, সে জন্য সীমান্তে বিএসএফের নজরদারি আরও বাড়ানো উচিত। অনুপ্রবেশকারীদের ধরতে সীমান্তের গ্রামে পুলিশের নজরদারিও বাড়াতে হবে। কারণ, বাংলাদেশের কিছু মানুষের মধ্যে ভারত-বিদ্বেষ বাড়ছে। তাই, দেশ তথা আমাদের জেলার আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে যে করেই হোক জেলার সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ রুখতেই হবে।
হেমতাবাদ হাইস্কুলের শিক্ষক