গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
গত কয়েক দিনের মতো শনিবার সকালেও পলিথিন-টিনে তৈরি ঘরটি বা পাশের টিনের চালা দেওয়া ইটের ঘর নিয়ে প্রতিবেশীদের উৎসাহ ছিল না। কিন্তু সকাল ৯টার পর থেকে ভিড় জমতে থাকে। করণদিঘির ছোট সোহারে ওই দু’টি ঘর নিয়েই বাড়ি বছর-পঁচিশের সাজ্জাক আলমের। পাঞ্জিপাড়ার ইকরচালায় গত বুধবার দুই পুলিশকর্মীকে গুলিতে জখম করে পালায় খুনের মামলায় বিচারাধীন বন্দি সাজ্জাক। তার পর থেকে সাজ্জাকের স্ত্রী আফুজা বেগম ও তাঁর নাবালক ছেলে উধাও এবং দু’টি ঘরেই তালা। সাজ্জাকের বাড়ির পাশেই তার এক দাদা, দুই ভাইয়ের বাড়ি। পুলিশের গুলিতে সাজ্জাকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই প্রতিবেশীরা তার বাড়ির সামনে ভিড় করেন। বাড়ির অদূরে এ দিনও ছিল পুলিশি নজরদারি।
সাজ্জাকের মৃত্যু নিয়ে তাঁর আত্মীয় বা প্রতিবেশীদের মধ্যে শোকের আবহ দেখা যায়নি। তবে বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা গিয়েছে। দিনভর এলাকায় ছিল থমথমে পরিবেশ। সাজ্জাকের বৌদি সাজ্জাদি বেগম বলেন, ‘‘সাজ্জাক খুনের মামলায় দোষী হত কি না, পরের বিষয়। কিন্তু পুলিশকে গুলি করে পালিয়ে ঠিক করেনি। তাই পুলিশের গুলিতে মরতে হল। যেমন কর্ম, তেমন ফল।’’ সাজ্জাদির স্বামী তথা সাজ্জাদের দাদা বাহারুল বছর দুয়েক আগে মারা গিয়েছেন। সাজ্জাদের এক ভাই মরতুজ একই খুনের মামলায় অভিযুক্ত, বিচারাধীন বন্দি। সাজ্জাক পুলিশকে গুলি করে যেদিন পালায়, সেই রাতেই তার ছোট ভাই খরতুজকে পুলিশ আটক করে বলে পরিবারের দাবি। সাজ্জাকের প্রতিবেশী মহম্মদ নসিম বলেন, ‘‘সাজ্জাক চার বছর এলাকায় নেই। ওর ভাইও অভিযুক্ত। ওদের জন্য এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। সাজ্জাকের মৃত্যুতে কারও শোক নেই।’’ এ দিকে, সাজ্জাক যে পোলট্রি ব্যবসায়ীকে খুনের মামলায় বিচারাধীন ছিল, সুবেশ দাস নামে খিকিরটোলার সেই ব্যবসায়ীর পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, তাঁদের আতঙ্ক কাটল।
বুধবার ইকরচালায় সাজ্জাকের গুলিতে জখম হন রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর নীলকান্ত সরকার ও কনস্টেবল দেবেন বৈশ্য। নীলকান্তের মা ফেলুরানি বলেন, ‘‘পুলিশ সমাজে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করে, শান্তি বজায় রাখার কাজ করে। আমার ছেলেও পুলিশকর্মী। সাজ্জাক ছেলেকে গুলি করায় পুলিশ ঠিক কাজ করেছে।’’