Pakistani Woman Arrested

গড়গড় করে বাংলা বলছেন পাকিস্তানি মহিলা! জেরায় পাওয়া তথ্যের সত্যতা খতিয়ে দেখছে পুলিশ

পুলিশের কাছে ধৃত মহিলার দাবি, এক সময় তাঁর নাম ছিল গৌরী দে। বিয়ের পরে ধর্ম এবং নাম বদলান। হানিফের সঙ্গে সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমস্যা বাড়তে থাকায় ছেলেকে নিয়ে ভারতে আসার পরিকল্পনা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ২২:২৭
শিলিগুড়ির পানিট্যাঙ্কি সীমান্ত থেকে ধৃত পাকিস্তানি নাগরিক শাইস্তা হানিফ।

শিলিগুড়ির পানিট্যাঙ্কি সীমান্ত থেকে ধৃত পাকিস্তানি নাগরিক শাইস্তা হানিফ। — নিজস্ব চিত্র।

পারিবারিক সম্পর্কের টানে কি সৌদি আরবের জেড্ডা থেকে নেপাল হয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন পাকিস্থানি নাগরিক শাইস্তা হানিফ ওরফে গৌরী দে! পুলিশি হেফাজতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। মহিলার দাবি, ভারতের ভিসার আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তা বাতিল হয়। সেই কারণেই নেপাল হয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা। যদিও মহিলার এই দুঃসাহসিক প্রচেষ্টার পিছনে অন্য কারও ‘মস্তিষ্ক’ রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা পুলিশের।

Advertisement

শিলিগুড়ির অনতিদূরে পানিট্যাঙ্কির কাঁটাতার বিহীন সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করার চেষ্টা করতে গিয়ে গত বুধবার সশস্ত্র সীমা বল (এস‌এসবি)-এর ৪১ নম্বর ব্যাটালিয়নের জ‌ওয়ানদের হাতে আটক হন মা ও ছেলে। এসএসবি রাজ্য পুলিশের হাতে তুলে দেয় মা, ছেলেকে। মহিলা নিজের আগের নাম গৌরী বলে দাবি করেন। পরে বিয়ের কারণে ধর্ম এবং নাম পরিবর্তন করেন বলেও জানান। উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরে তাঁর দিদি শীলা রায় থাকেন। সেখানে যাওয়ার উদ্দেশেই পানিট্যাঙ্কি সীমান্ত দিয়ে ভারতের প্রবেশ মা, ছেলের। শুক্রবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘ভারতের ভিসার জন্য আবেদন করা হলেও আমার আবেদন বাতিল হয়। পরে নেপালের ভিসা সংগ্রহ করি। পানিট্যাঙ্কির স্থলবন্দর দিয়ে এসএসবির চোখে ধুলো দিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করি। তবে এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ জড়িত না।’’

পুলিশ সূত্রে খবর, মহিলা জন্মসূত্রে অসামের শিলচরের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁরা ১০ ভাই বোন। ধৃত মহিলা ছিলেন সকলের ছোট। ১৯৭৯ সালে পাকিস্তানের করাচির বাসিন্দা মহম্মদ হানিফের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তখনই ধর্ম পরিবর্তনের পাশাপাশি গৌরী পরিবর্তন করে নিজের নাম নেন শাইস্তা হানিফ। বিয়ের এক বছর পরে তিনি স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বামীর সঙ্গে সৌদি আরবে পাড়ি দেন। এত দিন সেখানেই থাকছিলেন, কিন্তু ইদানীং স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে তিনি ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে দিদির বাড়িতে আসতে চান। পুলিশ সূত্রে খবর, এখনও একাধিক বিষয় নিয়ে প্রবল ধোঁয়াশা রয়েছে। মহিলার বক্তব্যের সত্যতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বছর চল্লিশেক আগে মুম্বইয়ে কাজ করতে যাওয়ার সূত্রে মহিলার সঙ্গে হানিফের পরিচয় বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ।

পুলিশ জানতে চায়, ওই মহিলা বিয়ের পর কি কখনও ভারতে এসেছিলেন? তিনি যদি ১৯৭৯-এ পাক নাগরিককে বিয়ে করেন তা হলে ২০২২ সালে তাঁর পাকিস্তানী পাসপোর্ট ইস্যু হল কেন! মহিলাকে জেরা করে এ বিষয়ে আরও স্পষ্ট তথ্য চাইছে পুলিশ। এ বিষয়ে দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ বলেন , ‘‘জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁর আদিবাড়ি অসমে। বিয়ের পর তিনি পাকিস্থানে চলে যান। তবে আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির তদন্ত চলছে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement