Flash Flood in Sikkim

তিস্তা যেন অস্ত্রের বহমান ভান্ডার

বৃহস্পতিবার ক্রান্তিতে এমনই একটি মর্টার শেল ফেটে এক জনের মৃত্যু হয়। রাজ্য প্রশাসনের একটি সূত্র থেকে বলা হয়, বিস্ফোরক যে ভেসে আসতে পারে, সেই নিয়ে আগাম কোনও বার্তা তাদের কাছে আসেনি।

Advertisement
অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৫৭
representational image

—প্রতীকী ছবি।

নদীতে এত বারুদ! এত অস্ত্র! তিস্তা নদীর পাড়ে হাজির পুলিশ অফিসারদেরও চোখেমুখে বিস্ময়। কারণ, নদীর জলে ভাসছে যুদ্ধ সরঞ্জাম। গত দু’দিন পাহাড় থেকে মৃতদেহ নিয়ে সমতলে নেমেছে তিস্তা। সেই সঙ্গে ভাসিয়ে আনছে মর্টার, সাধারণ শেল, লঞ্চারের শেল, গ্রেনেড, কার্তুজ। একটা-দু’টো নয়, প্রচুর বিস্ফোরক ভেসে আসছে তিস্তা নদী দিয়ে।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার ক্রান্তিতে এমনই একটি মর্টার শেল ফেটে এক জনের মৃত্যু হয়। রাজ্য প্রশাসনের একটি সূত্র থেকে বলা হয়, বিস্ফোরক যে ভেসে আসতে পারে, সেই নিয়ে আগাম কোনও বার্তা তাদের কাছে আসেনি। পেলে সময়মতো সতর্কতা নেওয়া যেত। এ দিন অবশ্য সেনাবাহিনীর তরফে সতর্ক করা হয় বিষয়টি নিয়ে। বিস্ফোরক উদ্ধারের খবর পেলেই এ দিন পুলিশ এবং সেনা, দু’তরফ থেকেই এলাকায় গিয়ে সরেজমিনে দেখা হয়েছে। সূত্রের দাবি, সেবক থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত তিস্তায় একাধিক জায়গা থেকে বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক, স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র, রেডার, নাইট্রোজেন সিলিন্ডার, হ্যান্ড-হেল্ড থার্মাল ডিভাইস, দূরবীন, ছোট লঞ্চারও উদ্ধার হয়েছে।

প্রাথমিক ভাবে এগুলি সবই সেনাবাহিনীর বলেই মনে করা হচ্ছে। বুধবার ভোরে হড়পা বানে ভেসে গিয়েছে সিকিমের একটি সেনা ছাউনি। সেখানে জওয়ানদের অনেককে তো বটেই, স্রোত ভাসিয়ে দিয়েছে বেশ কিছু অস্ত্র। নদী থেকে তাই অস্ত্রের সঙ্গে উদ্ধার হচ্ছে জওয়ানদের দেহও। কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে জওয়ান-আধিকারিকেরা সহকর্মীদের দেহ এবং অস্ত্র-বিস্ফোরক উদ্ধারে হাত লাগিয়েছেন। উদ্ধার করা একের পর এক বিস্ফোরক তিস্তার পাড়েই নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে বা ফাটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রচুর যুদ্ধ সরঞ্জাম নদী দিয়ে ভেসে চলায় উদ্বেগে রয়েছে জেলা পুলিশও। নদী পাড়ের বাসিন্দাদের হাত ঘুরে সেগুলি অবাঞ্ছিত কারও হাতে চলে যাবে কি না, তা নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে।

অভিযোগ, বৃহস্পতিবার নদী থেকে পাওয়া শেল তুলে এনে ভাঙার চেষ্টা করেছিলেন বিভিন্ন এলাকার অনেকেই। তা করতে গিয়ে বিস্ফোরণে ক্রান্তিতে এক শিশুর মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম হন আরও পাঁচ জন। শুক্রবার জলপাইগুড়ি, ক্রান্তি, মালবাজার, ময়নাগুড়ি থেকে মেখলিগঞ্জের তিস্তার পাড়ে, কখনও বা নদী থেকে অনেকটা দূরে ফাঁকা জায়গায় শেল, মর্টার, নাইট্রোজেন সিলিন্ডার পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। নদীতে বিস্ফোরক-অস্ত্র দেখে যাতে হাত না দিয়ে দ্রুত স্থানীয় থানায় খবর দেওয়া হয়, সমাজমাধ্যমে সেই প্রচার চালাচ্ছে পুলিশ।

আরও পড়ুন
Advertisement