গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। — নিজস্ব চিত্র।
উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া ব্লকের চেতনাগছ গ্রামে গেলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বিএসএফের খোঁড়া নালায় মাটি চাপা পড়ে মৃত চার শিশুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। রাজ্যপালকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃত শিশুদের পরিজনেরা। মৃত শিশুর পরিবারদের এক লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাজ্যপাল। পরিবারগুলির সঙ্গে সাক্ষাতের পর কেন ড্রেন সম্প্রসারণের কাজ হচ্ছিল, তা বিস্তারিত ভাবে জানতে বিএসএফের চেতনাগছ বিওপিতেও যান তিনি। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও অবগত করাবেন তিনি বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল।
সকালে কলকাতা থেকে ইসলামপুরে সার্কিট হাউসে এসে পৌঁছন রাজ্যপাল। সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় রাজ্যপাল জানিয়েছেন, চেতনাগছ গ্রামে মাটি চাপা পড়ে চার শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় বিএসএফের কাছে তিনি রিপোর্ট তলব করবেন। তার পর রাজ্যপালের কনভয় সোজা চলে যায় চেতনাগছ গ্রামে। সেই গ্রামেই চারটি শিশুর মাটি চাপা পড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তারই প্রেক্ষিতে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল রাজ্যপালের কাছে চোপড়া যাওয়ার আবেদন করে। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েই মঙ্গলবার অকুস্থলে পৌঁছে গেলেন সিভি আনন্দ বোস। তিনি মৃত চার শিশুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। প্রতিটি পরিবারকে এক লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। মাটি চাপা পড়ে আহত একটি শিশুর পড়াশোনার জন্য মাসিক পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথাও জানান রাজ্যপাল।
রাজ্যপালের কাছে বিএসএফকে নিয়ে একাধিক অভিযোগ জানান গ্রামবাসীরা। রাজ্যপাল গুরুত্ব দিয়ে সে সব শুনেছেন বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি অংশের দাবি। পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলে বেরিয়ে এসে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘যা হয়েছে তার সুবিচার যত দ্রুত সম্ভব নিশ্চিত করতে হবে। আমি বিষয়টি ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও জানাব। মুখ্যমন্ত্রীকেও জানাব। গ্রামবাসীদের অভিযোগের কথা আমি শুনেছি। গ্রামবাসীরা অবশ্যই সুবিচার পাবেন।’’
চেতনাগছে নালা সম্প্রসারণের কাজ চলাকালীন মাটি ধসে চার শিশুর মৃত্যুর প্রতিবাদে বিএসএফ জওয়ানদের শাস্তির দাবিতে গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছিল তৃণমূল। রাজ্যপালের চোপড়া সফরেও তৃণমূল কর্মীরা গলায় পোস্টার ঝুলিয়ে প্রতিবাদ জানান। তার পুরোভাগে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী গুলাম রব্বানি।