Child Trafficking Racket

কর্তব্যে গাফিলতি, বরখাস্ত শিশুদের হোমের চার কর্মী

কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে জলপাইগুড়ির সরকারি দত্তক সংস্থার ‘আশ্রয়’ কেন্দ্রের সব আধিকারিক এবং কর্মীদের একসঙ্গে বরখাস্ত করা হয়েছে।

অনির্বাণ রায়
শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:৩২
শিশু বিক্রির অভিযোগ।

শিশু বিক্রির অভিযোগ। —প্রতীকী চিত্র।

দত্তকের নাম করে শিশু বিক্রির অভিযোগের পরে আরও এক বার বিতর্কের কেন্দ্রে জলপাইগুড়ির শিশু দত্তক প্রদানকারী সংস্থা। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে জলপাইগুড়ির সরকারি দত্তক সংস্থার ‘আশ্রয়’ কেন্দ্রের সব আধিকারিক এবং কর্মীদের একসঙ্গে বরখাস্ত করা হয়েছে। আশ্রয় হোমের অনাথ শিশুদের জলপাইগুড়ি থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে কোচবিহারে। নতুন করে কর্মী নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত শিশুদের জলপাইগুড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে না।

মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির রেসকোর্সপাড়ায় সরকারি দত্তক প্রদানকারী সংস্থার (সা) অফিসে গিয়ে দেখা যায়, শিশুদের যে অংশে রাখা হত, সেটি তালাবন্ধ। গত জানুয়ারি মাসে জলপাইগুড়ির ‘সা’-এর আশ্রয় হোমে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে প্রশাসন কর্মীদের গাফিলতি পায়। তার পরেই সা-এর এক প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর এবং তিন আয়াকে বরখাস্ত করা হয়। শিশুদের দেখভালের জন্য কেউ না থাকায় চার শিশুকে কোচবিহারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা ফের জলপাইগুড়ির সরকারি হোমগুলির অন্দরে কী চলছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

২০১৭ সালে জলপাইগুড়িতে দত্তকের নাম করে শিশু বিক্রির অভিযোগে দেশ জুড়ে তোলপাড় হয়েছিল। তার পর থেকেই সরকারি ভাবেই শিশুদের দত্তক দেওয়ার প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হয়। দত্তক দেওয়ার সংস্থা ‘সা’-এর নিজস্ব ‘শেল্টার হোম’ তথা শিশুদের আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। এই কেন্দ্রে উদ্ধার হওয়া বা অনাথ শিশুদের রাখা হয়। সদ্যোজাত থেকে ছয় বছর পর্যন্ত শিশুদের রাখা হয়। এই শিশুদের কেন্দ্র থেকেই দত্তক দেওয়া হয়। শিশুদের হোম বলে তাদের যত্নও চূড়ান্ত সতর্কতার সঙ্গে করার নির্দেশ রয়েছে। গত ২৫ জানুয়ারি একটি শিশুর মৃত্যু ঘিরে কর্মীদের গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। প্রশাসন তদন্ত করে।

‘সা’-এর তথা শিশু কল্যাণ বিভাগের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) রৌণক আগরওয়াল বলেন, “শিশু মৃত্যুর পরেই আমরা তদন্ত শুরু করি। তার পরে এক প্রোগ্রাম কো অর্ডিনেটর এবং তিন আয়াকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার ফলে সেখানে শিশুদের দেখভালের জন্য কেউ নেই। চার শিশুকে কোচবিহার কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ‘সা’-তে সাতটি শিশু ছিল। তিন শিশুর ‘পুর্নবাসন’ হয়েছে। বাকিদের কোচবিহার পাঠানো হয়েছে।

কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলাশাসক থেকে সর্বস্তরের অফিসারেরা আচমকা পরিদর্শন শুরু করেছে ‘সা’-এর হোমে।

আরও পড়ুন