North Bengal medical College

টর্চ, লাঠিতেই চলছে পাহারা

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ১০৪ একরের ক্যাম্পাসে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার দাবিতে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি চিকিৎসকেরা (পিজিটি) আন্দোলনে নেমেছিলেন।

Advertisement
সৌমিত্র  কুণ্ডু
শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:৩০
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ। —ফাইল চিত্র।

বিশাল ক্যাম্পাস চত্বরে রাতের পাহারায় নিরাপত্তারক্ষীদের ‘ভরসা’ টর্চ, সরু লাঠি। অভিযোগ, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখনও এমনই।

Advertisement

আর জি কর হাসপাতালের ঘটনার পরে পুলিশের টহলদারি গাড়ি কয়েক দিন নিয়মিত মেডিক্যালের ক্যাম্পাসে নজরদারি শুরু করেছিল। অভিযোগ, এখন টহল কমেছে। চিকিৎসকদের দাবিমতো জরুরি বিভাগের সামনে অন্তত দু’জন পুলিশকর্মী মোতায়েন থাকার কথা। অভিযোগ, বেশিরভাগ সময় এক জনের দেখা মেলে। ছাত্রীনিবাসের সামনে পাঁচ জন মহিলা পুলিশকর্মীকে মোতায়েন রাখা হয়েছে। তাঁদের এক জনকে অনেক সময় জরুরি বিভাগেও নজরদারিতে রাখা হয়। কদাচিৎ টহল দেয় ‘উইনার্স বাহিনী’। তবে, পুলিশের দাবি, সব দিকেই নজর রাখা হয়েছে।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ১০৪ একরের ক্যাম্পাসে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার দাবিতে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি চিকিৎসকেরা (পিজিটি) আন্দোলনে নেমেছিলেন। তার জেরে ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্পে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস মেলে। গত ৩ ডিসেম্বর ‘স্টেট লেভেল সিকিউরিটি অডিট কমিটি’র চেয়ারম্যান তথা রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিজি সুরজিৎ পুরকায়স্থের নেতৃত্বে একটি দল মেডিক্যাল চত্বরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে। পিজিটি-দের তরফে তাঁকে নানা সমস্যার কথা জানানো হয়েছিল। অভিযোগ, এক মাস পরেও সে সব সমস্যা মেটেনি।

অভিযোগ, ছাত্রাবাসের পিছনের অংশে বিস্তীর্ণ এলাকা অন্ধকারে ডুবে থাকে। সেখানে অন্তত চারটি হাই মাস্ট আলো লাগানোর কথা থাকলেও, তা হয়নি। হাসপাতালের মূল ফটক ছাড়াও একাধিক ছোটখাটো গেট রয়েছে। সেখানেও তেমন নজরদারি নেই। অভিযোগ, কোথাও কোথাও সীমানা পাঁচিলের ভাঙা অংশ দিয়েও অনেকে যাতায়াত করেন।

এ নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা বলেন, ‘‘নিরাপত্তার জন্য অনেক ব্যবস্থাই করা হয়েছে। অনেক কাজও চলছে। এ দিনও ক্যাম্পাসে কিছু সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। বাকি থাকা কাজে নজর দেওয়া হচ্ছে।’’ সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হলেও ‘মনিটরিং রুমে’ সে সবের ছবিতে নজরদারি কে করবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

হাসপাতালের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, আর জি কর কাণ্ডের আগে মেডিক্যাল চত্বরের নিরাপত্তায় দিনরাতের তিনটি শিফটে ৮২ জন নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। কিন্তু, বিশাল ওই ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্য প্রায় আড়াইশোর কাছাকাছি রক্ষীর প্রয়োজন। একেবারে এত মিলবে না জেনে, আর জি কর কাণ্ডের পরে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের তরফে আরও ৮০ জন নিরাপত্তাকর্মী চাওয়া হয়েছিল। খাতায়-কলমে মেলে ৬০ জন। তাঁদের মধ্যে এখনও অনেকে কাজে যোগ দেননি বলে অভিযোগ।

কলেজের চূড়ান্ত শিক্ষাবর্ষের এক পড়ুয়া বলেন, ‘‘সংস্কার করে ২৪টিতে ডিউটি রুমে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ঢোকার ব্যবস্থা হয়েছে। তবে সেখানে কারা ঢুকলেন, সেই তথ্য রাখার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি।’’ হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, ‘‘বিষয়গুলি গুরুত্ব
দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন