Rice Farmers

‘হয়রানি’ এড়াতে ধান বিক্রি খোলা বাজারেই

সরকারি ধান ক্রয়কেন্দ্র, কিসান মান্ডিতে ধান বিক্রি করতে গেলে, ঝামেলা পোহাতে হবে বলে ফড়েরা চাষিদের বোঝাচ্ছে বলে অভিযোগ।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
গোয়ালপোখর শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:১০
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

শনিবার বেলা ১১টা। উত্তর দিনাজপুর জেলার গোয়ালপোখরের পাঞ্জিপাড়ায় গিয়ে দেখা গেল, প্রকাশ্যে খোলা বাজারে চাষিদের থেকে ধান কিনছে ফড়েরা। নেই প্রশাসনের নজরদারি। বিকেলে বস্তায় ভরে সেই ধান লরি করে পাঠানো হচ্ছে চাল কলগুলিতে। সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়কেন্দ্রগুলো কার্যত ফাঁকাই থেকে যাচ্ছে। প্রতিদিন চাষিরা নাম নথিভুক্তির জন্য যাচ্ছেন কিন্ত সার্ভার ‘ডাউন’। চাষিরা ঘুরে-ফিরে ফড়েদের খপ্পড়ে পড়ছেন।

Advertisement

সরকারি ধান ক্রয়কেন্দ্র, কিসান মান্ডিতে ধান বিক্রি করতে গেলে, ঝামেলা পোহাতে হবে বলে ফড়েরা চাষিদের বোঝাচ্ছে বলে অভিযোগ। বিভ্রান্ত হয়ে অনেক চাষিই সহায়ক মূল্যের চেয়ে কম দামে ফড়েদের কাছে ধান বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। সরকারি মূল্যে ধান বিক্রির জন্য এত দিন ‘সিপিসি’-তে গিয়ে তারিখ নিতে হত। অনেক সময়েই পারচেজ় অফিসারদের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ উঠত। চাষিরা অভিযোগ করতেন, তাঁরা বাধ্য হয়ে ফড়েদের ধান বিক্রি করেন। অভিযোগ এড়াতে উদ্যোগী হয় রাজ্য সরকার। চাষিরা এখন সরকারি কেন্দ্রে গিয়ে নিজের ধান বিক্রির জন্য আগে থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারছেন। পছন্দ মতো তারিখ নিতে পারছেন। সে কাজ চলছেও। তার পরেও ফড়েদের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে অভিযোগ উঠেছে।

চাষিদের একাংশের দাবি, তাঁদের বেশির ভাগই অনলাইন ব্যবস্থা নিয়ে কিছু জানেন না। সেই সুযোগে ফড়েরা বেশির ভাগ তারিখ আগেভাগে ‘বুক’ করে রাখছে। চাষিদের একাংশের ক্ষোভ কিসান মান্ডিতে চাষিদের হয়রানি করা হলেও ফড়েরা অনায়াসে ধান বিক্রি করে। শুধু পাঞ্জিপাড়া নয়, চোপড়া, ইসলামপুর, করণদিঘি, চাকুলিয়া রায়গঞ্জ, ইটাহার হেমতাবাদ-সহ গোটা জেলার একই ছবি। চাষিরা জানান, ধান কাটার আগেই অগ্রিম টাকা দিচ্ছে ফড়েরা। বেশির ভাগ চাষি ধান বিক্রি করে আলু-সহ শীতকালীন আনাজ চাষ করেন। তাই ফড়েদের থেকে অগ্রিম নিয়ে নিচ্ছেন চাষিরা। পাঞ্জিপাড়ার চাষি মকবুল আলম বলেন, ‘‘হাতে টাকা পেয়ে যাওয়ায় ওদের কাছেই বিক্রি করে দিলাম।’’

চাষিরা খোলাবাজারে ১,৭০০ থেকে ১,৮০০ টাকা কুইন্টাল ধরে ধান বিক্রি করছেন। অথচ, সরকারি সহায়ক মূল্য ২,২০৩ (পরিবহণ খরচ-সহ) টাকা। এ ভাবে খোলা বাজারে চাষিদের কুইন্টালে ৪০০-৫০০ টাকা লোকসান হচ্ছে। জেলা খাদ্য নিয়ামক দফতরের আধিকারিক সঞ্জীব হালদার বলেন, ‘‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। চাষিদেরও সচেতন হবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement