দণ্ডিকাণ্ডের সেই শিউলি মার্ডি জিতেছেন পঞ্চায়েত ভোটে। — নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘাসফুল শিবির তাঁদের ফিরিয়েও নিয়েছিল। বিজেপি অভিযোগ তুলেছিল, তিন আদিবাসী মহিলাকে দণ্ডি কাটিয়ে তৃণমূলে ফেরানো হয়। ওই তিন জনের মধ্যে শিউলি মার্ডিকে টিকিটও দিয়েছিল তৃণমূল। মঙ্গলবার পঞ্চায়েতের ফল প্রকাশ হতেই দেখা গেল, দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের গোফানগর পঞ্চায়েতের ৭১ নম্বর চক বলরাম আসন থেকে জিতেছেন সেই শিউলি। ১০৫ ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন তিনি। পরাজিত করেছেন বিজেপি প্রার্থীকে। তৃণমূলের একাংশ বলছে, এ ভাবে বিজেপির অভিযোগের যোগ্য জবাব দিয়েছে দল।
গত ৬ এপ্রিল বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন বেশ কয়েক জন আদিবাসী মহিলা। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন শিউলি, মার্টিনা কিস্কু, ঠাকরান সোরেন, মালতী মুর্মু। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফের তৃণমূলে ফেরেন শিউলি-সহ ওই চার জন। তৃণমূলে ফেরাতে ‘প্রায়শ্চিত্তে’র জন্য রাস্তায় দণ্ডি কাটানো হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় দু’জন গ্রেফতার হন। জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী প্রদীপ্তা চক্রবর্তীর নাম জড়ানোর পরেই তাঁকে পদ থেকে সরিয়েও দেয় শাসকদল।
এর পরেই মাঠে নামে বিজেপি। তারা শাসকদলের দিকে আঙুল তোলে। জানায়, আসল অভিযুক্ত এখনও মুক্ত। তাঁদের আড়াল কড়া হচ্ছে। ‘জনসংযোগ যাত্রা’য় গিয়ে ওই তিন মহিলার সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে অভিষেক বলেন, ‘‘গত ৭ এপ্রিল যে ঘটনা ঘটেছিল, তাকে সভ্য সমাজের কোনও মানুষ সমর্থন করেন না। দলগত ভাবেও সমর্থন করা যায় না। তৃণমূল বা অন্য কোনও রাজনৈতিক দল, কেউই এই ঘটনাকে সমর্থন করতে পারে না।’’ অভিষেকের সংযোজন, ‘‘আমাদের যিনি মহিলা সমিতির সভাপতি ছিলেন তাঁর একটা ভূমিকা ছিল বলে শুনেছিলাম। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ ওই তিন আদিবাসী মহিলার সঙ্গে তিনি দেখা করেন। তাঁদের সঙ্গে চা পানও করেন।
এই নিয়ে শাসকদল এবং বিরোধীদের চাপানউতরের মধ্যেই শিউলিকে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী করে তৃণমূল। বিজেপি যদিও জানায়, তার ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করতেই এই চমক। শেষ পর্যন্ত শিউলিকে প্রার্থী করার তৃণমূলের কৌশল সফল হয়েছে বলেই দাবি দলের।