Jalpesh Mandir

জল্পেশে জল মন্দিরের বাইরে থেকে, নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের

জল্পেশ মন্দিরে জল ঢালা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত গত বছর। গত বছরের শ্রাবণে হাই কোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিটে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এক ব্যক্তি মামলা দায়ের করে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৩ ১০:০০
জল ঢালতে হবে জল্পেশে মন্দিরের বাইরে থেকেই। ফাইল চিত্র

জল ঢালতে হবে জল্পেশে মন্দিরের বাইরে থেকেই। ফাইল চিত্র

শ্রাবণ মাসে পুণ্যার্থীদের জল্পেশ মন্দিরের বাইরে থেকেই জল ঢালতে হবে, এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। মন্দিরের বাইরে থেকে ঢালা জল লোহার পাতের মাধ্যমে শিবলিঙ্গে পৌঁছবে। শ্রাবণে এই পদ্ধতিই জল্পেশ মন্দিরে চেয়েছিল ব্লক প্রশাসন। সে প্রস্তাবেই সায় দিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিশ্বরূপ চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ। গত মঙ্গলবার কলকাতায় একটি জনস্বার্থ মামলায় এবং একটি রিট আবেদনের ভিত্তিতে ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছিল। জেলা প্রশাসন এবং পুলিশের দাবি, এই নির্দেশের ফলে এক দিকে যেমন মন্দিরে শ্রাবণ মাসের সোমবারের ভিড় সামলানো যাবে, অন্য দিকে বেশি সংখ্যক পুণ্যার্থী কম সময়ে জল ঢালতে পারবেন।

জল্পেশ মন্দিরে জল ঢালা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত গত বছর। গত বছরের শ্রাবণে হাই কোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিটে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এক ব্যক্তি মামলা দায়ের করে জল্পেশ মন্দিরে পুণ্যার্থীর ভিড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। সে মামলায় বিচারপতি প্রথম গর্ভগৃহের বাইরে থেকে জল ঢালার নির্দেশ দেন। চলতি বছরে শ্রাবণ মাসের আগে সে নির্দেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আবেদন হয় এবং আগের ব্যবস্থা-মাফিক মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকে জল ঢালার অনুমতি চাওয়া হয়। একটি জনস্বার্থ মামলাও দায়ের করা হয় বাইরে থেকে জল ঢালার আবেদন করে। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বিষয়টি নিয়ে ব্লক প্রশাসনের রিপোর্ট তলব করে। ব্লক প্রশাসন বাইরে থেকে জল ঢালার ব্যবস্থা রাখার প্রস্তাব দেয়। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সেটাই মেনে নিয়েছে।

Advertisement

ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশে লিখেছে, যেহেতু শ্রাবণ মাসের উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে, তাই এখন ব্লক প্রশাসনের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না। তবে যদি মন্দির কর্তৃপক্ষের কিছু বলার থাকে, ব্লক প্রশাসনকে আজ, বৃহস্পতিবারের মধ্যে লিখিত ভাবে জানাতে হবে। তার ভিত্তিতে প্রশাসন ইচ্ছে করলে, সিদ্ধান্তে রদবদল করতে পারে।

জল্পেশ মন্দির কমিটির দাবি, তারা উচ্চতর আদালতে যাবে এবং জেলা প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনার অনুরোধ করবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে, গর্ভগৃহে ঢোকার জন্য টিকিট নিতে পারবে না কমিটি। মন্দির কমিটির দাবি, শ্রাবণ মাসের পুণ্যার্থীদের দেওয়া অর্থেই সারা বছর মন্দিরের খরচ চলে, বিদ্যুতের বিল থেকে কর্মীদের বেতন দেওয়া হয়। মন্দির কমিটির সম্পাদক গিরীন্দ্রনাথ দেব বলেন, ‘‘কয়েক জন চক্রান্ত করছেন। আমরা যথাযথ স্থানে আবেদন করব। ভারতে অনেক মন্দির আছে। কোথাও প্রশাসন এমন সিদ্ধান্ত নেয় না।’’

প্রশাসনের দাবি, নতুন প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। জল্পেশ মন্দির নিয়ে গত বছর হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা-ই জানানো হয়েছিল। প্রশাসনের দাবি, হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ মেনে জল্পেশ মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চাওয়া হলেও কেউ আসেননি। দাবি, গত ২১ জুলাই বিডিও শুভ্র নন্দী মন্দিরে গিয়ে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করলেও মন্দির কর্তৃপক্ষ কোনও প্রতিনিধি পাঠাননি।

আরও পড়ুন
Advertisement