TMC

মণিপুরকাণ্ডে নিন্দাপ্রস্তাব আনতেই পুরনিগমের বৈঠক ছাড়ল বিজেপি, অন্য কারণে কক্ষত্যাগ সিপিএমের

বৈঠকের শুরুতে কোনও গন্ডগোল হয়নি। তবে তাল কাটে কিছু ক্ষণ বাদে। দুপুরে মণিপুরের ঘটনাকে ঘিরে নিন্দাপ্রস্তাবের কথা বলেন মেয়র পারিষদরা। চেয়ারম্যান তাতে সম্মতি জানান। একে কেন্দ্র করেই শুরু হয় বিতণ্ডা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৩ ১৯:২৯
BJP and CPM boycott Siliguri Municipal board meeting after TMC announces resolution on Manipur incident and other things

শিলিগুড়ি পুরনিগমের বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।

শিলিগুড়ি পুর নিগমের বোর্ড মিটিংয়ের (কাউন্সিলরদের) মাঝপথে সভাকক্ষ থেকে বেরিয়ে গেলেন বিরোধীরা। বৈঠকে মণিপুরকাণ্ডে নিন্দাপ্রস্তাব উঠতেই বিরোধিতা করে বিজেপি। কাউন্সিলররা সভাকক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান। এর কিছু ক্ষণ পর সিপিএমের প্রতিনিধিরা বৈঠক ছেড়ে উঠে পড়েন। তবে সিপিএমের বক্তব্য, মণিপুরের বিষয় নয়, তাদের বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার কারণ হল, পুরনিগমের বোর্ড মিটিংকেও তৃণমূল দলীয় বৈঠক মনে করে নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছিল। এই কারণে তারা বৈঠক বয়কট করেছেন।

শুক্রবার শিলিগুড়ি পুরনিগমের ১৮তম বোর্ড মিটিং ছিল। বৈঠকের শুরুতে কোনও গন্ডগোল হয়নি। তবে তাল কাটে কিছু ক্ষণ বাদে। দুপুরে মণিপুরের ঘটনাকে ঘিরে নিন্দাপ্রস্তাবের কথা বলেন মেয়র পারিষদরা। চেয়ারম্যান তাতে সম্মতি জানান। একে কেন্দ্র করেই শুরু হয় বিতণ্ডা। এক দিকে নিন্দাপ্রস্তাব এবং অন্য দিকে শহরের বহুচর্চিত একটি বহুতলের বৈধতাকে কেন্দ্র করে তুমুল কথা কাটাকাটি হয়। এর পর বৈঠক বয়কট করে বেরিয়ে পড়ে বিজেপি এবং সিপিএম।

Advertisement

শিলিগুড়ি পুরনিগমের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি কাউন্সিলর অমিত জৈন বলেন, ‘‘উস্কানিমূলক বক্তব্য চলছে বোর্ড মিটিংয়ে। বাংলার নারীরা যেখানে নির্যাতিত হচ্ছেন, সেখানে এই দুর্নীতিবাজ বোর্ড শুধু মণিপুর নিয়ে কথা বলছে। যাঁরা সাধারণ মানুষকে ন্যূনতম পরিষেবা দিতে পারছে না, তারা খালি মণিপুর-মণিপুর করছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘সিপিএম এবং তৃণমূল ‘ইন্ডিয়া’র নাম করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। মাসে এক বার বোর্ডের বৈঠক হয়, সেখানে কাজের কথা বাদ দিয়ে মণিপুর নিয়ে ‘নিন্দাপ্রস্তাবের’ প্রস্তাব পাশ হচ্ছে।’’

অন্য দিকে, সিপিএম কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘পুরনিগমের চেয়ারম্যান স্পিকারের ভূমিকা পালন করে বোর্ড মিটিংয়ে। কিন্তু তিনি সভা পরিচালনার কাজই জানেন না। তারা নিজেরাই প্রস্তাব আনছেন, নিজেরাই পাশ করিয়ে নিচ্ছেন। আমাদের বক্তব্য বা সম্মতি, কোনও কিছুর তোয়াক্কা করছেন না। এমনকি, প্রস্তাব নিয়ে কোনও কপি নেই আমাদের কাছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তৃণমূলের নিয়মে কখনও একটা বোর্ড পরিচালিত হতে পারে না। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, চেয়ারম্যান কোনও নিয়মকানুন জানেন না। এর প্রতিবাদে আমরা সভা ছেড়ে বেরিয়ে এসেছি।’’ অন্য দিকে বিজেপির সঙ্গেই বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসাকে কেন্দ্র করে নুরুল বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য একদম পরিষ্কার। কেন্দ্রে বিজেপিকে এবং রাজ্যে তৃণমূলকে হঠাও।’’

বৈঠকে এই গন্ডগোল নিয়ে পুরনিগমের মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘বৈঠক ছেড়ে বিজেপির বেরিয়ে যাওয়ার কারণ বুঝতে পারছি। কিন্তু বামেরা বেরিয়ে যাওয়ার কারণ বুঝতে পারছি না। যে বহুতলকে কেন্দ্র করে এত গোলযোগ তা বাম আমলে অনুমতিপ্রাপ্ত। তখন মেয়র বামেদের ছিল। এসজেডিএ বামেদের। তাঁরা অনুমতি দিয়েছেন। শুক্রবারের মধ্যে ওই বহুতল নিয়ে প্রস্তাব পাশ করাতেই হত। কারণ, আদালতের নির্দেশ রয়েছে। সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ‘রিভাইসড প্ল্যান’ পাশ করা যাবে না। অনেক ত্রুটি রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement