Teesta River Flash flood

চিন্তা বাড়ছে চিন সীমান্ত নিয়েও

সেনা সূত্রের খবর, ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক প্রায় পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে পড়ায় সেনাবাহিনীর গতিবিধি নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। সমস্যা দেখা দিতে পারে সেনার রসদ পৌঁছনো নিয়েও।

Advertisement
কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:১১

—ফাইল চিত্র।

উত্তর এবং পূর্ব সিকিমের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে প্রশাসনিক স্তরে। অত্যন্ত উদ্বেগে সিকিমের চিন সীমান্তে মোতায়েন সেনাবাহিনীও। তবে চিন সীমান্তে যাতে কোথাও কোনও সমস্যা না হয় তা দেখার জন্য বুধবার সেনার তরফে জরুরি নির্দেশিকা বিভিন্ন ছাউনিতে পাঠানো হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নানা ভাবে চালু করার চেষ্টাও শুরু হয়েছে। উত্তর সিকিমের দক্ষিণ লোনাক হ্রদে মাত্রাধিক বৃষ্টির জেরেই তিস্তা নদীর হড়পা বানে বিপর্যস্ত হয়েছে সিকিম। বুধবার রাত অবধি নিখোঁজ ২২ জন সেনা জওয়ান। সকাল থেকে সংখ্যাটা ছিল ২৩। রাতে সিংতাম লাগোয়া এলাকা থেকেই একজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

Advertisement

সেনা সূত্রের খবর, ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক প্রায় পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে পড়ায় সেনাবাহিনীর গতিবিধি নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। সমস্যা দেখা দিতে পারে সেনার রসদ পৌঁছনো নিয়েও। কারণ, বায়ুসেনা মারফত বা সেনা হেলিকপ্টার ছাড়া সিকিমে যোগাযোগের আর উপায় আপাতত নেই। মেল্লি থেকে তিস্তাবাজার অবধি জাতীয় সড়কের কিছুই আর অবশিষ্ট নেই বললেই চলে। ফলে কবে রাস্তা চালু হবে তা বলার মতো পরিস্থিতি নেই। তার উপর চিন সীমান্ত লাগোয়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখন কড়া সুরক্ষা বজায় রাখাটাই সেনার কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিকিম সেনাবাহিনীর ৩৩ কোরের অধীনে। গ্যাংটক ছাড়াও সুকনা থেকে পরিস্থিতির উপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে জানানো হচ্ছে পরিস্থিতি। রাতেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছন সিকিমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘সিকিমের লাইফলাইন, জাতীয় সড়ক পুরো অবরুদ্ধ। চিন সীমান্তে মোতায়েন সেনাবাহিনীর যোগাযোগ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। একে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করে দ্রুত কেন্দ্রকে ব্যবস্থা নিতে হবে।’’

সিকিমের উত্তর প্রান্তে বিভিন্ন দিকে সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। নাথু লা, ডোকলামে সিকিম থেকে নজরদারি চলেছে। এজন্য গোটা সিকিমে সেনা শিবির রয়েছে। বারদাং সেনা ছাউনি একটি ট্রানজ়িট এবং প্রশিক্ষণ শিবির হিসাবে কাজ করে। তিন সপ্তাহের প্রশিক্ষণে জওয়ানেরা ছাউনিতে থাকেন। ১৭ মাউন্টেন ডিভিশনের আওতায় ছাউনি রয়েছে। সেখান থেকে তিস্তার তোড়ে ২২ জন নিখোঁজ। ৪১টি গাড়ি তলিয়ে গিয়েছে। উদ্ধার কাজে সেনা, এনডিআর‌এফ নামলেও বৃষ্টি, ধস, রাস্তা ভাঙা, সেতু ভেঙে পড়ায় একাধিক সমস্যায় জওয়ানেরা। তার উপর বিদ্যুৎ পরিষেবা এবং মোবাইল নেটওয়ার্কের সমস্যা চলছে। রাত অবধি সিকিমকে কী ভাবে সেনা নেটওয়ার্কে পুরোপুরি সচল রাখা হবে তা নিয়ে সুকনা সেনা সদর দফতরে আলোচনা চলছে। সেনা মুখপাত্র কর্নেল অঞ্জনকুমার বসুমাতা বলেন, ‘‘আবহাওয়া পরিস্থিতি প্রতিকূল রয়েছে। রাস্তা, সেতু নেই। তার মধ্যে প্রবল চ্যালেঞ্জে সেনাবাহিনী উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এক জওয়ানকে উদ্ধারও করা গিয়েছে। নিখোঁজ জওয়ানদের পরিবারগুলির সঙ্গে সমন্বয় রাখা হচ্ছে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement