Madhyamik Examination 2024

অভাব, স্বামীর ‘বাধা’ রুখে পরীক্ষা তরুণীর

তরুণীর অভিযোগ, মদ্যপ স্বামী তার উপরে অত্যাচার শুরু করে। জানিয়ে দেয়, আর পড়াশোনার কোনও সুযোগই সে পাবে না। পরিস্থিতি বুঝে সরাসরি জেলা পুলিশ সুপারের দফতরে ফোন করে অভিযোগ জানায় ওই তরুণী।

Advertisement
হিতৈষী দেবনাথ
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৫৬
An image of exam

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

অভাবের সংসার। পড়াশোনার টাকা জোগাড়ে পরিচারিকার কাজ পেয়ে বছর ষোলোর নাবালিকা গিয়েছিল সিকিমে। সেখানে থাকাকালীন মাস তিনেক আগে, সমাজমাধ্যমে আলিপুরদুয়ারের এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। সম্পর্ক গড়ায় বিয়েতে। ওই নাবালিকার দাবি, আলাপের সময় ওই যুবক তাকে বলেছিল, বিয়ের পরেও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে সে। কিন্তু বিয়ের দু’দিনের মধ্যেই সব স্বপ্ন ভেঙে যায়।

Advertisement

তরুণীর অভিযোগ, মদ্যপ স্বামী তার উপরে অত্যাচার শুরু করে। জানিয়ে দেয়, আর পড়াশোনার কোনও সুযোগই সে পাবে না। পরিস্থিতি বুঝে সরাসরি জেলা পুলিশ সুপারের দফতরে ফোন করে অভিযোগ জানায় ওই তরুণী। তার ভিত্তিতে স্বামীকে গ্রেফতার করে আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ। নাবালিকাকে পাঠানো হয় সরকারি হোমে। মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর আগে ওই নাবালিকা হোমের আধিকারিকদের জানায়, হোমে বসে সে পরীক্ষা দিতে রাজি নয়। তার ইচ্ছে, পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়েই মাধ্যমিক দেওয়ার। এর পরেই হোম কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের তরফে মেয়েটির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

প্রশাসন সূত্রে খবর, আলিপুরদুয়ার জেলারই ওই নাবালিকা জন্মের পর থেকেই মা-বাবাকে পাশে পায়নি। তার বাবা ভিন‌্ রাজ্যে কাজে গিয়ে আর ফেরেননি। মা অন্য জায়গায় চলে যান। ওই তরুণীকে নিজের কাছে রেখেছিলেন তার পিসি, পিসেমশাই। তবে অভাবের সংসার ছিল। তরুণীর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার খরচ চালানোর উপায় ছিল না। পড়ার জন্য টাকা জোগাড়ে সিকিমে পরিচারিকার কাজ করতে চলে যায় ওই নাবালিকা।

পড়াশোনার প্রতি তার এমন আগ্রহকে কুর্নিশ জানিয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ এবং চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি। আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আগামী দিনে তার সাফল্য কামনা করি।’’ চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির আলিপুরদুয়ার জেলা চেয়ারম্যান অসীম দত্ত বলেন, ‘‘মেয়েটির পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ প্রশংসনীয়। ওর মনের অদম্য জেদ এবং ইচ্ছেতেই এটা সম্ভব হয়েছে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement