আইএসএফ নেতা তথা ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ জনস্বার্থ মামলা করেছেন কলকাতা হাই কোর্টে। ফাইল ছবি।
একাধিক দফায় পঞ্চায়েত ভোট করানোর দাবি জানালেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। সোমবার এই মর্মে কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেছেন তিনি। সেই মামলায় বলা হয়েছে, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে যদি যথেষ্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী পঞ্চায়েত ভোটে মোতায়েন না করা যায়, তবে এক দফার বদলে একাধিক দফায় ভোট করানো হোক।
এ ক্ষেত্রে বিচার্য, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে পঞ্চায়েত ভোটে ইতিমধ্যেই ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু রাজ্য বাহিনী চাইলেও কেন্দ্র কেবল মাত্র ৩৩৭ কোম্পানি বাহিনী দেওয়ার কথা জানিয়েছে। বাকি ৪৮৫ কোম্পানি নিয়ে কেন্দ্র উচ্চবাচ্য করেনি। যদিও কমিশনের তরফে চিঠি দিয়ে সোমবার আরও এক বার বাকি বাহিনী পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে। রাজনীতির কারবারিরা বলেছিলেন, কেন্দ্রের কম বাহিনী দেওয়ার সিদ্ধান্তে পঞ্চায়েত ভোটের দফা বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে গোটা রাজ্যে এক দফায় পঞ্চায়েত ভোট করানোর যে সিদ্ধান্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশন নিয়েছে, তার বিরুদ্ধে যাবে গোটা বিষয়টি। এই পরিস্থিতিতেই পঞ্চায়েত ভোটের দফা বৃদ্ধির আবেদন জানিয়ে মামলাও দায়ের হল কলকাতা হাই কোর্টে।
গত ১৭ জুন হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, ২০১৩ সালে যে সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট করানো হয়েছিল, ২০২৩ সালের ভোটেও অন্তত সেই সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৮২ হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে। ভোটও হয়েছিল পাঁচ দফায়। সেই রায়ের প্রসঙ্গ টেনেই কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বলেছিল, রাজ্যে অন্তত ৮০০ কোম্পানি বা তার বেশি সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য।
সেই নির্দেশ মেনেই কেন্দ্রের কাছে মোট ৮২২ কোম্পানি বাহিনী চেয়েছিল কমিশন। যার মধ্যে কেবল ৩৩৭ কোম্পানি বাহিনী দেওয়ার ব্যাপারে সায় দিয়েছে কেন্দ্র। উল্লেখ্য, আদালতের নির্দেশ মেনে কেন্দ্রের কাছে কমিশন বাহিনী চাওয়ার পরও বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কমিশনের সমালোচনা করেছিলেন। শুভেন্দু বলেছিলেন, ২০১৩ সালে জেলার সংখ্যা কম ছিল, ভোটার কম ছিল, বুথ কম ছিল। তাই ৮২ হাজার কেন্দ্রীয়বাহিনীতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছিল। এ বার সব ক্ষেত্রেই সংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়বাহিনীরও সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়া উচিত।
অদ্ভুত ভাবে আদালতে পঞ্চায়েত ভোটের দফা বৃদ্ধির জন্য জনস্বার্থ মামলার আর্জি করেও একই কথা বলতে শোনা গিয়েছে আইএসএফ নেতা তথা ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদকে। তিনিও বলেছেন, ‘‘এ বার পঞ্চায়েতে পাঁচটি জেলা বেড়েছে। বেড়েছে বুথ, ভোটারও। তাই যদি যথেষ্ট বাহিনী না আনা যায়, তবে পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তার স্বার্থেই দফা বৃদ্ধি করা হোক।’’