Panchayat Election

পঞ্চায়েত ভোটের আগে মাঠে সক্রিয় হচ্ছে আইএসএফ

বিশেষ করে সংখ্যালঘু এলাকায় সিপিএম ও কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করে আইএসএফ অনেক ক্ষেত্রেই তৃণমূলকে বেগ দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement
সুস্মিত হালদার
শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৩৯
Party Flag of Indian Secular Front (ISF)

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সক্রিয় আইএসএফ। প্রতীকী চিত্র।

আসন্ন পঞ্চায়েতের ভোটের ময়দানে নদিয়ায় নতুন শক্তি হিসাবে দেখা দিতে পারে আইএসএফ। গত বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস-সিপিএমের সঙ্গে জোটে তারা থাকলেও সে ভাবে দাগ কাটতে পারেনি। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে কিছু জায়গায় একেবারে স্থানীয় স্তরে ভোট কাটাকাটির অঙ্কে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা।

বিশেষ করে সংখ্যালঘু এলাকায় সিপিএম ও কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করে আইএসএফ অনেক ক্ষেত্রেই তৃণমূলকে বেগ দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এরই মধ্যে একাধিক বিধানসভা এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে স্থানীয় আইএসএফ নেতাদের। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা বুথ স্তরে আসন নিয়ে দর কষাকষিতে যেতে পারেন বলেও সূত্রের খবর।

Advertisement

নদিয়ার উত্তর অংশের বেশির ভাগ বিধানসভা এলাকায় গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন সংখ্যালঘু ভোটারেরা। নদিয়া জেলা পরিষদে এ বার আসন বেড়ে হয়েছে ৫২টি। তার অর্ধেক রয়েছে উদ্বাস্তু ও মতুয়া-প্রধান দক্ষিণে। বাকি অর্ধেকসংখ্যালঘু-প্রধান উত্তরে।

চাপড়ায় প্রায় ৭০ শতাংশ, পলাশিপাড়া ও কালীগঞ্জে প্রায় ৬৫ শতাংশ, নাকাশিপাড়ায় প্রায় ৫৬ শতাংশ, করিমপুর প্রায় ৪৮ থেকে ৫০ শতাংশ ও তেহট্টে প্রায় ৪০ শতাংশ মুসলিম ভোটার রয়েছেন। কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রেও একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত।

এরই মধ্যে নদিয়া উত্তরে কয়েকটি জায়গায় তৃণমূল থেকে পঞ্চায়েত সদস্য, বুথ সভাপতি ও কর্মীরা সিপিএমে যোগ দিয়েছেন। চাপড়া ও করিমপুরে আবার কিছু তৃণমূল কর্মী কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। সংখ্যাটা এই মুহূর্তে তেমন বড় না হলেও সিপিএম ও কংগ্রেস নেতাকর্মীদের তা অনেকটা চাঙ্গা করেছে। এর উপর আইএসএফ কর্মীদের সক্রিয়তায় অনেকে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন।

গত বিধানসভা ভোটে আইএসএফ চাপড়া ও কৃষ্ণগঞ্জে প্রার্থী দিয়েছিল। কিন্তু কিছু প্রার্থীর যোগ্যতা ও ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলে শেষ মুহূর্তে প্রার্থী দেয় সিপিএম। শেষ পর্যন্ত ভোটের লড়াই থেকে অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছিল আইএসএফ। কিন্তু এ বার চাপড়া, কালীগঞ্জ, পলাশিপাড়া, করিমপুরের পাশাপাশি ধুবুলিয়া থানা এলাকার বেশ কিছু এলাকায় তারা ফের সক্রিয় হতে শুরু করেছে। বেশ কিছু পঞ্চায়েতে তারা বুথ ও অঞ্চল কমিটিও গঠন করে ফেলেছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।

আইএসএফ সূত্রের খবর, চাপড়া এলাকায় বৃত্তিহুদা, হাতিশালা ২, হৃদয়পুর, আলফা, চাপড়া ১ ও হাটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তারা বুথ স্তরে কমিটি গঠন করেছে। উত্তরের বাকি বিধানসভা এলাকায় বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত এলাকায় তারা ছোট-ছোট কর্মী বৈঠক ও কর্মিসভা করছে।

আইএসএফের চাপড়া বিধানসভা এলাকার আহ্বায়ক ফরজ আলি মোল্লা বলেন, “আসন নিয়ে একেবারে নিচু স্তরে আমরা কংগ্রেস ও সিপিএমের সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে কথা বলা শুরু করেছি। আলোচনার মাধ্যমে নিশ্চয়ই ইতিবাচক জায়গায় পৌঁছতে পারব।”

সেই সঙ্গে, দক্ষিণ নদিয়ায় হরিণঘাটা ও রানাঘাট ২ ব্লকেও আইএসএফ সংগঠন বাড়ানোর চেষ্টা করছে। রানাঘাট ২ ব্লকের কামালপুর, রঘুনাথপুর-হিজুলি ২, আঁইশমালি এলাকায় তারা সক্রিয় হচ্ছে বলে খবর। এই এলাকায় দলের নেতৃত্বে থাকা ইন্দাদুল ইসলামের দাবি, “জোট নিয়ে রাজ্য নেতৃত্ব শেষ কথা বলবেন। আমরা নিজেদের মতো করে কর্মসূচি গ্রহণ করতে শুরু করেছি।”

তবে আইএসএফের নদিয়া জেলা আহ্বায়ক আরিফ আখের বলেন, “এখন আমরা শুধু সংগঠন শক্তিশালী করার কাজটা করে যাচ্ছি। কারও সঙ্গে জোট বা আসন ভাগাভাগি নিয়ে এখনই কিছু ভাবছি না।”

আরও পড়ুন
Advertisement