Homeless People of Samsherganj

জবুথবু শীতে ত্রিপলের নীচেই রাত কাটছে আসমাদের

স্কুলের ত্রাণ শিবিরে না যাওয়ায় উত্তর চাচন্ড গ্রামে ভাঙন দুর্গত প্রায় ৩০টি পরিবারের দিন কাটছে খোলা আকাশের নীচে।

Advertisement
বিমান হাজরা
শমসেরগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:২৪
এ ভাবেই দিন কাটছে ভাঙন দুর্গতদের। 

এ ভাবেই দিন কাটছে ভাঙন দুর্গতদের।  নিজস্ব চিত্র।

খোলা মাঠে তাঁবুর নীচে দিন কাটছে তাঁদের। শীত পড়তেই শমসেরগঞ্জের উত্তর চাচন্ডে ভাঙনে গৃহহারা পরিবারগুলির দুর্ভোগ দ্বিগুণ হয়েছে। অভিযোগ, খাবার পাচ্ছেন না তাঁরা। জুটছে না সরকারি ত্রাণও।

Advertisement

স্কুলের ত্রাণ শিবিরে না যাওয়ায় উত্তর চাচন্ড গ্রামে ভাঙন দুর্গত প্রায় ৩০টি পরিবারের দিন কাটছে খোলা আকাশের নীচে। নদীপাড়ে ত্রিপল খাটিয়ে বাস করছেন তাঁরা। বাড়ি-ঘর হারিয়ে মাঠেই ত্রিপল খাটিয়ে রয়েছেন কামাল মোমিনের পরিবার। কামাল বলেন, “শীতে বাড়িতে পোশাক-আশাক কিছুই নেই। চোখের সামনে ঘরটাও চলে গেল। আগে দু’ কিলোমিটার দূরে ছিল নদী। রেলপথ ছিল সেখান দিয়ে। বিঘা দশেক জমিতে চাষ করতাম। সব জমি চলে গিয়েছে নদীগর্ভে। সরকারি ত্রাণ বলতে পেয়েছি একটি ত্রিপল ও কম্বল। এখন দু’বেলা খাবারও জুটছে না।” বাসিন্দাদের অভিযোগ, যে সব জায়গায় ভাঙন হয়েছে সেখানে নৌকোয় করে বালি ফেলে ভাঙন আটকানোর চেষ্টা চলছে। তা বালির বাঁধের মতোই একদিন ভেঙে পড়বে, তা-ও জানেন গ্রামবাসীরা। জহিরুদ্দিন শেখ বলেন, “ প্রতিবার ভোটের সময় নেতা-মন্ত্রীরা গ্রামে আসেন ভোট চাইতে। তখন তাঁদের মুখে আশ্বাসের ফুলঝুরি ছোটে। কিন্তু ভোট মিটে যেতেই তাঁদের আর দেখা মেলে না।’’

তাঁর কথায়, ‘‘প্রশাসন, নেতারা বলছেন খাবার দিচ্ছে। কোথায় খাবার? একটা দিনের জন্যও খাবার মেলেনি। প্রত্যেকের ঘরের উনুনটাই তো ধসে গিয়েছে গঙ্গায়। কীভাবে রান্না করে খাবে। রান্নাই বা কী করব? কী ভাবে দিন কাটছে, তা আমরাই জানি। ব্লক অফিস বা পঞ্চায়েত কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। কিছুদিন খোঁজখবর নিয়েছে। এখন আর তাঁদের পা পড়ে না।’’

রেক্সোনা বিবি নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘বিড়ি বেঁধে কোনও রকমে সংসার চালাচ্ছি। একটু জমি চাই যাতে বাড়িটা করতে পারি। নদীর পাড়ে ঠান্ডায় আর থাকা যাচ্ছে না। দিনেরাতে মশার কামড় খেয়ে পড়ে রয়েছি। নদীর পাড় থেকে যদি সরতে পারতাম!’’ শমসেরগঞ্জের বিডিও সুজিত লোধ অবশ্য বলছেন, “প্রথম দিনই উত্তর চাচন্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। চালও দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ ত্রাণে খাদ্যসামগ্রীও বরাদ্দ করা হয়েছে। খাবারের অভাব থাকার কথা নয়। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গঙ্গা-ভাঙন বড় সমস্যা। সেচ
দফতর দেখছে।”

আরও পড়ুন
Advertisement